তুরস্কে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনা আবারও শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা জানান, রাশিয়ার একটি প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে ইস্তাম্বুলে পৌঁছেছে। একই দিনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও তার প্রতিনিধি দলও আংকারার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এক ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা।
রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট পুতিনের উপদেষ্টা ভ্লাদিমির মেডিনস্কি।
দলটিতে আরো তিনজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও চারজন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। পুতিন নিজে না থাকায় পশ্চিমা নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, রাশিয়া আদৌ শান্তি চায় কি না।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সরাসরি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং পরে পুতিনের অপেক্ষায় থাকবেন। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোদোলিয়াক স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘জেলেনস্কি কেবল পুতিনের সঙ্গেই আলোচনায় বসবেন।’
এখনও নিশ্চিত নয়, ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা কখন এবং কোথায় হবে। ধারণা করা হচ্ছে, জেলেনস্কি ও এরদোয়ানের বৈঠকের পর তা স্পষ্ট হবে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, আলোচনা একটি প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে হওয়ার কথা। রাশিয়া যুদ্ধবিরতির পরিবর্তে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে।
বুধবার রাতে পুতিন রাশিয়ার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়াকে ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও, পুতিন তা প্রত্যাখ্যান করেন।
এই আলোচনাকে ২০২২ সালের যুদ্ধের শুরুতে ইস্তাম্বুলে হওয়া আলোচনার ‘পুনরায় সূচনা’ হিসেবে দেখছে মস্কো। তবে ইউক্রেন বলছে, রাশিয়ার প্রস্তাবগুলো বাস্তবসম্মত নয়, বরং একতরফা চাপ।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, ‘তিন বছরের দুঃসহ যুদ্ধের পর এখন এক নতুন সুযোগ এসেছে। আমরা আশা করছি, ইস্তাম্বুলের আলোচনা একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।’
এদিকে, ন্যাটো পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই সিবিহা যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট সেক্রেটারি মার্কো রুবিও ও সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে ইউক্রেনের দাবি, এখন পর্যন্ত রাশিয়া গঠনমূলক পদক্ষেপ নেয়নি।
ফ্রান্স, ফিনল্যান্ডসহ ইউরোপীয় নেতারাও আলোচনার পক্ষে ও যুদ্ধবিরতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে একটি চেয়ার খালি পড়ে আছে—ভ্লাদিমির পুতিনের চেয়ার। এটা প্রমাণ করে, শান্তি আলোচনায় অনাগ্রহী পক্ষ একমাত্র রাশিয়াই।’ পশ্চিমা বিশ্ব সতর্ক করে বলেছে, আলোচনা অগ্রসর না হলে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।
সূত্র : এপি
আরআর/এসএন