লাল কার্ড ও অসদাচরণের জন্য ৬ মাস নিষিদ্ধ সাদ উদ্দিন

বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলার সাদ উদ্দিন আগামী ৬ মাস বাফুফে আয়োজিত কোনো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। গত ২ মে কিংস অ্যারেনায় বসুন্ধরা কিংস ও ঢাকা আবাহনী ম্যাচে লাল কার্ড পাওয়ার পর নিয়ম বহির্ভূতভাবে ম্যাচের পর ডাগআউটে উপস্থিত হয়ে ম্যাচ কমিশনারের সঙ্গে অসদাচরণ করেছিলেন তিনি। এজন্য সাদ বড় সাজার মধ্যেই পড়লেন।

লাল কার্ড পাওয়ার পরপরই দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ ছিলেন তিনি। যা নিয়ে ডিসিপ্লিনারি কমিটির প্রথম সভায় সাদ উদ্দিনকে শোকজ করা হয়েছিল। সেই শোকজের প্রেক্ষিতে তিনি অপরাধ স্বীকার করে ফেডারেশনে ফিরতি চিঠি দিয়েছেন। সাদের অপরাধ ও ম্যাচ কমিশনারের রিপোর্ট সবকিছু পর্যালোচনা করে ডিসিপ্লিনারি দ্বিতীয় সভায় তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ছয় মাস নিষিদ্ধ হলেও ঘরোয়া ফুটবলে খুব বেশি সময় তাকে বাইরে থাকতে হচ্ছে না। বসুন্ধরা কিংসের চলতি মৌসুমে আর চার ম্যাচ বাকি রয়েছে। জুলাই থেকে নতুন মৌসুমের দলবদল। পরবর্তী মৌসুম মাঠে গড়াতে পারে অক্টোবর-নভেম্বরে। সাদ উদ্দিন এই শাস্তির বিপরীতে আপিল করলে খানিকটা মওকুফেরও সুযোগ রয়েছে। ছয় মাসের শাস্তি হলেও কার্যত সাদ উদ্দিনের কিংসের এই চার ম্যাচই মূলত নিষেধাজ্ঞা।

১০ জুন ঢাকায় এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ রয়েছে বাংলাদেশের। বাফুফে আয়োজিত সকল প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ হওয়ায় জাতীয় দলেও তার খেলা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কাজী সালাউদ্দিনের বিগত কমিটি ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, কোনো ফুটবলার ক্লাবে নিষিদ্ধ থাকলে জাতীয় দলের জন্য বিবেচ্য হবে না। ২০২৩ সালে কিংসের ফুটবলাররা মদকাণ্ডে সাজা পাওয়ার পর জাতীয় দলে ডাক পাননি। সাদ উদ্দিনের ক্ষেত্রেও সেই আইন প্রযোজ্য হওয়ার কথা। কারণ তিনি স্বয়ং বাফুফে থেকে আগামী ৬ মাসের জন্য সাজাপ্রাপ্ত (বাফুফে আয়োজিত কোনো প্রতিযোগিতা খেলতে পারবেন না)। এতে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ১০ জুনের পাশাপাশি ৯ ও ১৪ অক্টোবর হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচেও তার বিবেচ্য হওয়ার কথা নয়। বাফুফেতে অবশ্য শেষ কথা বলে কিছু নেই, ক্ষণে ক্ষণে আইন ও আইনের ব্যাখ্যা বদল হয়।

সাদ উদ্দিনের পাশাপাশি বসুন্ধরা কিংসের সহকারী কোচ মাহবুব হোসেন রক্সিও পরবর্তী চার ম্যাচে নিষিদ্ধ থাকছেন। ফলে চলতি মৌসুমে তিনি আর ডাগআউটে দাঁড়াতে পারবেন না। ভবিষ্যতের জন্যও কড়া সতর্কতা প্রদান করা হয়েছে তাকে। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় সম্প্রতি কয়েকটি ম্যাচে বেশ বিশৃঙ্খলা হয়েছে। এজন্য আগামী ছয় মাস পর্যবেক্ষণে থাকবে ভেন্যুটি। এই সময়ের মধ্যে কোনো শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনা ঘটলে বসুন্ধরা কিংস ছয়টি হোম ম্যাচ দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলবে।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে রেফারিকে লাঞ্ছনার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। এতে ফরাশগঞ্জ, সিটি ক্লাব ও ওয়ারির কর্মকর্তা ও খেলোয়াড়কে জরিমানার পাশাপাশি বিভিন্ন মেয়াদে ম্যাচ নিষিদ্ধসহ এক বছর পর্যন্ত সাজা প্রদান করা হয়েছে। ব্যক্তির পাশাপাশি জরিমানা ও সতর্ক করা হয়েছে ক্লাবকেও।

বুধবার সন্ধ্যায় ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাফুফে সেই সভার সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৩৯ মিনিটে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে। ফুটবল ফেডারেশনে পেশাদার স্টাফরা ফুটবল উন্নয়নে এতটাই ব্যস্ত নাকি যে, প্রেস বিজ্ঞপ্তি মধ্যরাত পেরিয়ে যাওয়ার পর দেন। নাকি প্রেস বিজ্ঞপ্তির অনুমোদন দিতেই ৩৬ ঘণ্টা সময় নেন ফেডারেশনের নীতি-নির্ধারকরা!


এসএস/টিএ

Share this news on: