ঋতুপর্ণা-রুপ্নারা ঢাকায়, সাবিনা-মাসুরাকে ডাকেননি বাটলার

ভুটানে নারী ফুটবল লিগ খেলছেন বাংলাদেশের ১০ ফুটবলার। সেই ১০ জনের মধ্যে পাঁচ ফুটবলারকে জাতীয় দলে ডেকেছেন বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার। আজ (শনিবার) সকালে ভুটান থেকে ঋতুপর্ণা চাকমা, রুপ্না চাকমা, শামসুন্নাহার, মনিকা চাকমা ও মারিয়া মান্দা ঢাকায় বাফুফে ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু সেখানে ডাক পড়েনি সাবিনা-মাসুরাদের।

আগামী জুনে মিয়ানমারে নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের আগে প্রস্তুতির জন্য ২৭ মে জর্ডানে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট খেলতে রওনা হবে বাংলাদেশ দল। বাফুফের চিঠি পেয়ে ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেড গোলরক্ষক রুপ্না চাকমা, পারো এফসি ঋতুপর্ণা ও মনিকা চাকমা এবং থিম্পু এফসি মারিয়া ও শামসুন্নাহারকে ছেড়েছে। ভুটানে খেলা দশ ফুটবলারের মধ্যে ডাক পাননি সবচেয়ে সিনিয়র চার ফুটবলার সাবিনা খাতুন, মাসুরা পারভীন, সানজিদা আক্তার ও কৃষ্ণা রাণী সরকার। এই চারজনের সঙ্গে রয়েছেন জাপানিজ বংশোদ্ভূত মাতসুসিমা সুমাইয়াও।

ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে মূল নেতৃত্বে ছিলেন দুইবারের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও মাসুরা পারভীন। আর সুমাইয়া বাফুফে সভাপতি বরাবর চিঠি লিখেছিলেন। এদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে সানজিদা ও কৃষ্ণার, সে কারণে কোচ এই পাঁচজনকে ডাকেননি বলে ধারণা ফুটবলসংশ্লিষ্টদের। বাফুফে কিংবা কোচ বাটলার ভুটানের লিগে খেলা পাঁচ ফুটবলারকে ডাকা এবং বাকিদের না ডাকার কোনো ব্যাখ্যা দেননি এখনও।

ভুটানের লিগে পারো এফসির হয়ে খেলেছেন এই চার বাংলাদেশি, এর মধ্যে জাতীয় দলে ডাক পেলেন দু’জন

১৮ নারী ফুটবলার কোচ বাটলারের বিপক্ষে বিদ্রোহ করেছিলেন। বাটলারের অনুশীলন বয়কট করায় তারা মার্চে আরব আমিরাত সফরেও যাননি। বাফুফে কর্মকর্তাদের কয়েক দফা আলোচনার পর নারী ফুটবলাররা বাটলারের অধীনে অনুশীলনে ফিরতে রাজি হয়েছেন। সেই সময় অতীত স্মৃতি ভুলে যাওয়ার কথা বলেছিলেন কোচ ও খেলোয়াড় দুই পক্ষই। বাটলারের দল নির্বাচন অবশ্য সেটা নির্দেশ করছে না।

অক্টোবরে সাফ টুর্নামেন্টের পর থেকে সিনিয়র ফুটবলাররা দীর্ঘদিন খেলার বাইরে ছিলেন। সম্প্রতি ভুটানে যাওয়া দশ ফুটবলারের সবাই একটি করে ম্যাচ খেলেছেন। বাংলাদেশের কৃষ্ণা ও সাবিনা ম্যাচসেরার স্বীকৃতিও পেয়েছেন সেখানে। বাফুফে অবশ্য সেই ম্যাচের আগেই তিন ক্লাবের কাছে পাঁচ খেলোয়াড় চেয়ে চিঠি দিয়েছিল। ফলে কোচ বাটলারের কাছে ২০২৪ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় সাফ টুর্নামেন্টই ছিল শেষ পারফরম্যান্স। সেটা বিবেচনায় ধরলে অবশ্যই মাসুরা পারভীন দলে ডাক পাওয়ার কথা। তিনি সেই টুর্নামেন্টে ভালো খেলেছিলেন, পাশাপাশি তিনি এখনও দেশের অন্যতম সেরা নারী ডিফেন্ডার। অথচ তাকে দলে ডাকেননি কোচ।

২০২২ ও ২০২৪ দুই সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক ছিলেন সাবিনা খাতুন। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা ফুটবলারও তিনি। সামনে বাংলাদেশের নারী এশিয়ান কাপ বাছাই। এমন সময় বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ফুটবলারকে প্রয়োজনই মনে করছেন না কোচ পিটার বাটলার।

ফুটবলসংশ্লিষ্টদের মতে, সাবিনা এখনও বাংলাদেশ দলে এক অর্ধ (৪৫ মিনিট) পুরোপুরি খেলার সামর্থ্য রাখেন। এশিয়ান কাপ হকির বাছাইয়ে হকি ফেডারেশন তারুণ্যের জয়গান গাইতে গিয়ে জিমিকে দলে নেয়নি। ফলে ৪৩ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপ না খেলার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে, ফুটবলে প্রথমবারের মতো নারী এশিয়া কাপ খেলার সম্ভাবনা থাকলেও কোচের খেলোয়াড় নির্বাচন নিয়ে ইতোমধ্যে ফুটবলাঙ্গনে আলোচনা তৈরি হয়েছে। 

এসএন 

Share this news on: