চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে ঝড়ে ঝরে পড়া অপরিপক্ব আম বিক্রি হচ্ছে মাত্র কেজি প্রতি সাড়ে ৩ টাকায়। শুক্রবার রাতে ঘূর্ণিঝড় ও প্রবল বৃষ্টিতে ফজলি, গোপালভোগ, আশ্বিনা, খিরসাপাতি ও গুটিসহ বিভিন্ন জাতের বিপুল পরিমাণ আম গাছ থেকে পড়ে যায়। চাষিরা এখন রাস্তার পাশে ভ্যানে, সাইকেলে বা মাথায় করে এনে সেই আম বিক্রি করছেন, আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা তা কিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
শনিবার (১৭ মে) গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া, পুরাতন বাজার, যাতাহারা, রহনপুর ও জামতলা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শত শত আমচাষি ঝরে পড়া আম অতি সস্তায় বিক্রি করছেন। অথচ ওই আম বাজারে উঠলে প্রতি কেজির দাম হতো ১৫০ টাকা পর্যন্ত।
স্থানীয় চাষি এরসাদ আলী বলেন, "গত রাতে প্রচণ্ড ঝড়ে অনেক অপরিপক্ব আম পড়ে গেছে। বাজারে তুলতে পারছি না, তাই কম দামে রাস্তার পাশে বিক্রি করছি।"
নয়াদিয়াড়ী গ্রামের আবুল কালাম জানান, "বাগানের অনেক আম পড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা খুব কম দামে নিচ্ছে, এতে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি।"
রাধানগরের আমচাষি জুয়েল রানা বলেন, "আর মাত্র এক সপ্তাহ পর বাজারে যেত আমার আম। যেটার দাম হতো দেড় শ টাকা, এখন সেটা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে তিন টাকায়।"
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. ইয়াছিন আলী জানান, গোমস্তাপুরে ঝড়ের প্রভাবে আমের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। "এই অপরিপক্ব আম বাজারে বিক্রিযোগ্য নয় বললেই চলে। স্থানীয় হকাররা খুব কম দামে কিনে নিচ্ছেন," বলেন তিনি।
জেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ বছর জেলায় ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ২৯০ মেট্রিক টন। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে চাষিদের এই ধরনের ক্ষতি আম উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনায় বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টিকে/টিএ