আরও একটাবার সহযোগী দেশের বিপক্ষে বাংলাদেশে হার। হংকং, যুক্তরাষ্ট্র, স্কটল্যান্ড কিংবা আয়ারল্যান্ডের পর এবার বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ধাক্কা দিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রায় দেড় যুগের পথচলার পরেও বাংলাদেশের এমন হার সম্ভবত নাটকীয় বা অঘটন কিছু নয়। বরং বলা চলে এক স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ।
২০২৪ সালেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। ডালাসের প্রেইরি স্টেডিয়ামে সেই দুই হারকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পতনের অন্যতম বিন্দু ধরা হয়েছিল। এরপর বহু নাটকীয়তা দেখেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এসেছেন নতুন কোচ ফিল সিমন্স। যিনি আবার কি না, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন।
কিন্তু আরও একবার আইসিসি সহযোগী দেশের কাছে হার। ক্রিকেটে অঘটন হয়। তথাকথিত বড় দলের বিপক্ষে ছোট দল কিংবা সহযোগী দেশগুলোর জয় পুরো ক্রিকেট দুনিয়ারই উদযাপনের অংশ। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে সহযোগী দেশগুলোর জয় এখন যেন নিয়মিত চিত্র। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই সহযোগী দেশের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হেরেছে। গতকাল আরব আমিরাতের বিপক্ষে ছিল ১০ম হার।
সহযোগী দেশের মধ্যে স্কটল্যান্ডের আছে বাংলাদেশ হেরেছে ৩ টি-টোয়েন্টি। নেদারল্যান্ডস এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে হার আছে ২টি করে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং হংকং-য়ের বিপক্ষে হার ১টি করে। আর আয়ারল্যান্ড ২০১৭ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার আগে একবার হারায় বাংলাদেশকে। সবমিলিয়ে এই ১০ হার বাংলাদেশের। প্রথম দেশ হিসেবে যা বাংলাদেশের জন্য লজ্জার এক বিশ্বরেকর্ডও বটে।
ক্রিকেট বিশ্বে বাকিদের তুলনায় সহযোগী দেশের বিপক্ষে হারের তালিকায় বাংলাদেশ অনেকটাই এগিয়ে আছে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ৯ দেশের মাঝে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সহযোগী দেশের বিপক্ষে হেরেছে ৪ বার। বাংলাদেশের পর যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ইংল্যান্ড হেরেছে ৩ বার। পাকিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার হার ২টি করে। আর শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডের হার ১বার করে। সহযোগী দেশের বিপক্ষে হারের স্বাদ এখনো পায়নি দুই দেশ। তারা অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত।
ক্রিকেটের বর্তমান চালচিত্রে সহযোগী দেশগুলোকে পিছিয়ে রাখার খুব একটা সুযোগই নেই। ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নেদারল্যান্ডসের জয়, ওয়ানডে নেদারল্যান্ডসের বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় কিংবা আফগানিস্তানের উত্থান বারবারই জানান দিচ্ছে টেস্ট ক্রিকেটে বাইরে থাকা দেশগুলোর সক্ষমতা।
কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে ১৮ বছর পার করে দেয়ার পরেও বাংলাদেশের এমন পরিসংখ্যানও হয়ত ক্রিকেটপ্রেমীদের কাঠগড়ায় ওঠার দাবি রাখে। আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ জয় নিয়ে ফিরলেও হয়ত একটা বড় দাগ থেকেই যাবে দেশের ক্রিকেটের গল্পে।
আরআর/এসএন