বলিউড বনাম দক্ষিণী সিনেইন্ডাস্ট্রির লড়াই নতুন নয়! বক্স অফিসের অঙ্ক নিয়ে এমনিতেই দুই সিনেজগতের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। কেউ কাউকে ‘সূচাগ্র মেদিনী’ ছাড়তে নারাজ! এবার দীপিকা পাড়ুকোন বনাম সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা তরজায় বলিউড নায়িকার পাশে হিন্দি সিনেদুনিয়ার তারকারা। দীপিকার দাবি করা আট ঘণ্টার শিফট নিয়ে আগেই ব্যাটিং করেছেন অজয় দেবগন। এবার ‘লাভ আজ কাল’ নায়িকার জন্য মাঠে সাইফ আলি খান।
ভাঙ্গাকে পরোক্ষাভাবে তোপ দেগে পারিবারিক মূল্যবোধের পাঠ দিলেন অভিনেতা।
বিতর্ক আর সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা যেন একে-অপরের সমার্থক! ‘অ্যানিম্যাল’ ছবিতে অতিরিক্ত ভায়োলেন্স দেখিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন তিনি। ‘নারীবিদ্বেষী’ তকমাও সাঁটা হয়েছে পরিচালকের নামের পাশে। এবার দীপিকা পাড়ুকোনকে কটাক্ষ করে ফের একবার চর্চার শিরোনামে ভাঙ্গা। বলিউড ‘পদ্মাবত’-এর বিরুদ্ধে অপেশাদারিত্বের অভিযোগ এনেছিলেন পরিচালক। শুধু তাই নয়, ইন্ডাস্ট্রির বহিরাগত হয়েও যেভাবে নিজের নিষ্ঠা, দক্ষতার মাধ্যমে বলিউডের পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছেন, সেই অভিনেত্রীকেই তাঁর জীবনদর্শন, নারীবাদ নিয়ে বিঁধেছেন সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা। সেই বিতর্কযজ্ঞেই দীপিকার পাশে দাঁড়িয়ে মুখ খুলেছেন অজয় দেবগন। সিংহম দাবি, “সৎ পরিচালক হলে ৮ ঘণ্টা শিফট নিয়ে অসুবিধে থাকার কথা নয়। বলিউড তো দিব্যি চলছে আট ঘণ্টার শিফটে।” এবার দক্ষিণী পরিচালককে ছেড়ে কথা বললেন না সাইফ আলি খানও।
বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, শর্ত না মেলায় ‘স্পিরিট’ ছবি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন দীপিকা পাড়ুকোন। তিনি নাকি আকাশছোঁয়া পারিশ্রমিকের পাশাপাশি মেয়ে দুয়ার জন্য আট ঘণ্টার শিফটে কাজ করার দাবি রেখেছিলেন, যা মানতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় প্রযোজনা সংস্থাকে। তার পরই প্রজেক্ট ছেড়ে বেরিয়ে যান দীপিকা পাড়ুকোন। সেই প্রেক্ষিতেই দীপিকাকে দুষে এক্স হ্যান্ডেলে বিস্ফোরক পোস্ট করেন পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা। এহেন বিতর্কের মাঝেই মুখ খুললেন সাইফ । আরব মিডিয়া সামিটে বলিউড নবাব বলেন, “কাজের থেকেও আমি পরিবারকে সময় দেওয়া বেশি পছন্দ করি। বাড়ি ফিরে সন্তানরা ঘুমিয়ে পড়েছে দেখলে আমার মোটেই ভালো লাগে না। এটা জীবনের সাফল্য নয়। সাফল্যের চাবিকাঠি তখনই পাওয়া যায়, যখন আমরা সদর্পে এটা বলা শিখে যাই যে- না, এবার বেরতে হবে, বাড়িতে বাচ্চাদের সঙ্গে আধঘণ্টা সময় কাটাব। আমরা বছরে চারটে ছুটি পাই। আর আমার বাচ্চারা যখন ছুটিতে থাকে, তখন আমি কাজ করি না। এটা আমার পবিত্র সময়। আমি এমন একটা বয়সে এসে পৌঁছেছি যেখানে মা এবং সন্তান উভয়কেই ফোন করে খোঁজখবর রাখতে হয় সবসময়ে।”
সেই সাক্ষাৎকারেই সাইফের সংযোজন, “কাজ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু ওই একসঙ্গে পাস্তা বানানো, সকলে মিলে খাবার উপভোগ করা, বাচ্চাদের যত্ন নেওয়া, এটাই জীবনে বেঁচে থাকার রসদ। কাজের থেকেও পরিবার এবং পারিবারিক সময়কে প্রাধান্য দেওয়া, এটাই আমার কাছে জীবনের সবথেকে বড় সাফল্য।” ভাঙ্গা বিতর্কে দিন কয়েক আগেই স্টকহোমে কার্টিয়ারের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন দীপিকা পাড়ুকোন। অভিনেত্রী বলেন, “সত্যতা এবং বিশুদ্ধতা, এই দুটো বিষয়ই আমাকে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। আর যখনই কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ি, তখনই নিজের মনের কথা শুনে সিদ্ধান্ত নিই। আর সেই সিদ্ধান্তেই অনড় থাকি। সেটাই আমাকে শান্তি দেয়।” যদিও এপ্রসঙ্গে কারও নামোল্লেখ করেননি দীপিকা। তবে একাংশের অনুমান তিনি হয়তো ‘স্পিরিট’ সিনেমা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গেই তিনি একথা বলেছেন।
এফপি/এসএন