দক্ষিণী ছবিতে দীপিকা পাড়ুকোনের উপস্থিতি নিয়ে জোর আলোচনা চলছে ইন্ডাস্ট্রিজুড়ে। সদ্য ‘স্পিরিট’ ছবির নির্মাতা সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা তাঁকে বাদ দিয়েছেন বলে খবর, আর তার পেছনে কারণ হিসেবে উঠে আসছে নায়িকার নানান অতিরিক্ত দাবি। বলা হচ্ছে, তিনি প্রতিদিন মাত্র ছয় ঘণ্টা কাজ করতে চান, তেলুগু সংলাপ নিজে ডাব করবেন না, পারিশ্রমিক হিসাবে দাবি করেছেন পঁচিশ কোটি টাকা, সঙ্গে ছবির লাভের একটি অংশ এবং ব্যক্তিগত চব্বিশ জনের কর্মী দল রাখতে চান। এমনকি চিত্রনাট্যের চূড়ান্ত রূপে কোনও হঠাৎ পরিবর্তন করা যাবে না, এই শর্তও নাকি রেখেছিলেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে পরিচালক ভাঙ্গা দীপিকার পরিবর্তে ত্রিপ্তি ডিমরিকে বেছে নেন, যাঁর সঙ্গে আগেও কাজ করেছেন এবং যাঁকে সহজে মানিয়ে নেওয়া একজন শিল্পী হিসেবে মনে করেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই ইন্ডাস্ট্রিতে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক, কারণ দীপিকা বর্তমানে ‘কাল্কি ২৮৯৮ এডি’ নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিরিজের কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন। এই সিরিজের দ্বিতীয় ভাগে যদি তাঁর পরিবর্তন ঘটে, তাহলে তা গল্পের ধারাবাহিকতার পক্ষে বড় বিপর্যয় হয়ে দাঁড়াবে।
অন্যদিকে, নির্মাণাধীন ‘আইকন’ নামের আরেকটি বড় বাজেটের ছবিতে দীপিকার নাম শোনা যাচ্ছিল। অ্যাটলি পরিচালিত এবং আল্লু অর্জুন অভিনীত এই ছবির জন্য এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কিন্তু ‘স্পিরিট’ ঘটনার পর নির্মাতারা নায়িকা নির্বাচন নিয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
ইন্ডাস্ট্রির অভ্যন্তরীণ মহল থেকে কেউ কেউ বলছেন, একজন শিল্পীর নিজের মূল্য বোঝা উচিত, কিন্তু তা যেন সীমা না ছাড়ায়। স্টার পাওয়ার থাকলে তার সঙ্গে দায়িত্ববোধও থাকা জরুরি। দীপিকার মতো একজন অভিনেত্রী যদি বারবার কঠিন শর্ত আরোপ করতে থাকেন, তাহলে ভবিষ্যতে পুরুষ-প্রধান বড় প্রজেক্টে তাঁকে নিয়ে দ্বিধা থেকেই যাবে।
এই ঘটনার পর দীপিকার বিরুদ্ধে দক্ষিণী সিনেমাপ্রেমীদের একটি অংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, নায়িকা অহংকার থেকে দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিকে ঠিকভাবে সম্মান দেখাচ্ছেন না। অনেকে মনে করছেন, ‘স্পিরিট’-এ দীপিকার পক্ষ থেকে করা প্রচারণাও প্রত্যাশিত ফল দেয়নি। আর যদি আগামী দিনে ‘কাল্কি ২’ কিংবা ‘আইকন’-এও একই রকম সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে তা তাঁর দীর্ঘমেয়াদি ইমেজের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে।
সব মিলিয়ে, দীপিকার দাবি কতটা যুক্তিসঙ্গত, আর কতটা অতিরিক্ত — তা নিয়েই এখন বিতর্ক। তবে নির্মাতারা ভবিষ্যতে যে কোনও কাজ শুরু করার আগে আরও বেশি স্পষ্টভাবে চুক্তি তৈরি করবেন বলেই ধারণা। দীপিকার মতো তারকা হিসেবে টিকে থাকতে গেলে কেবল প্রতিভা নয়, নমনীয় মনোভাবও হয়ে উঠতে পারে তাঁর সাফল্যের আসল চাবিকাঠি।
এমআর/টিএ