সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগেই শরীয়তপুরের সুরেশ্বর দরবার শরীফে হাজারো মুসল্লির অংশগ্রহণে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য শান্তি কামনা করেছেন দরবার শরিফের ভক্ত-অনুরাগী মুসল্লিরা।
শুক্রবার (৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় দরবার শরিফের ঈদগাহ মাঠে পৃথকভাবে দুটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাত দুটিতে ইমামতি করেন শাহ সুফি সৈয়দ বেলাল নূরী আল সুরেশ্বরী ও মাওলানা মো. জুলহাস উদ্দিন। এতে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ভক্ত ও সুরেশ্বর দরবার শরিফের আশপাশের ৩০ গ্রামের প্রায় ৩ হাজার মুসল্লি অংশ নেন।
জানা যায়, জান শরিফ শাহ সুরেশ্বরী নামে এক সুফি সাধক কর্তৃক শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত সুরেশ্বর দরবার শরিফের কয়েক লাখ ভক্ত ও অনুরাগী রয়েছেন সারা দেশে।
পিরোজপুর, ভোলা, মাদারীপুর, চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, লক্ষ্মীপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব ভক্ত ও অনুরাগীরা ১৯২৮ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের এক দিন আগেই ঈদসহ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন। এর মধ্যে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর, কেদারপুর, চাকধ্, চন্ডিপুর ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ দারাগড়সহ ৩০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে আজ শুক্রবার পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করছেন।
গাজীপুর থেকে সুরেশ্বর দরবার শরিফে ঈদের নামাজ আদায় করতে আসা একজন নারী বলেন, মায়ের সঙ্গে ছোটবেলা থেকে দরবার শরিফে আসতাম। আজকেও ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য গাজীপুর থেকে এসেছি। এখন তবারক খেয়ে আবার চলে যাব।
স্থানীয় এক মুসল্লি বলেন, আমার বাপ-দাদাও সুরেশ্বর দরবার শরিফের নিয়ম মেনে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করতেন। আমরা তাদেরই ধারাবাহিকতায় ধর্ম পালন করে থাকি। পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করলাম। এখন সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময় শেষে তবারক খাব।
দরবার শরিফের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (প্রধান খাদেম) মুনসুর আলী মৃধা দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন জেলার প্রায় তিন হাজার ভক্ত-অনুসারী সুরেশ্বর দরবার শরিফে অনুষ্ঠিত পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজে অংশ নিয়েছেন। সারা দেশে সুরেশ্বর দরবার শরিফের প্রায় ১০ লাখ ভক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি অনুসারী নিজ নিজ এলাকায় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করেছেন।
সুরেশ্বর দরবার শরিফের শাহ সুফি সৈয়দ বেলাল নূরী আল সুরেশ্বরী বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আজ পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় শেষে বিশ্ব উম্মাহর জন্য শান্তি কামনা করেছি। এভাবে সুরেশ্বর দরবার শরিফে প্রায় ১০০ বছর ধরে ঈদুল আজহা উদযাপন হয়ে আসছে।
আরআর/টিএ