থাইল্যান্ড গিয়ে চোখের পাতা এক করতে পারলেন না আবীর চট্টোপাধ্যায়, মিমি চক্রবর্তী! বিদেশ গিয়েছেন। কোথায় মন খুলে ঘুরবেন, কেনাকাটা সারবেন। তা নয়! থাইল্যান্ডের থেকে চার ঘণ্টা দূরে চুম্পনে উইন্ডোজ় প্রযোজনা সংস্থার পুজোর ছবি ‘রক্তবীজ ২’-এর গানের দৃশ্যের শুটিং করতে করতেই সময় কেটে গেল তাদের। এই প্রথম নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কোনও ছবির গানের দৃশ্যের শুটিং হল বিদেশে। এই খবর প্রথম জানিয়েছিল আনন্দবাজার ডট কম।
বিদেশে প্রথম শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন? ছবির কাহিনি-চিত্রনাট্যকার জ়িনিয়া সেনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল।
তিনি জানান, ভারতীয় সময় অনুযায়ী মধ্য রাতে বিমান ধরে ভোরে ব্যাংকক পৌঁছেন ছবির নায়ক-নায়িকা। তার পর বড় জোর দু’ঘণ্টা ঘুম। নির্দিষ্ট সময়ে আবার যাত্রা। গন্তব্য শুটিং স্থল। চুম্পন পৌঁছে শুধুই কাজ। হাত খুলে কেনাকাটা করবেন, সেই সুযোগও পাননি! সেখানে সে রকম কোনও দোকানও নেই! অগত্যা শুটিং ফুরোতেই বাড়ির পথে।
উইন্ডোজের নিজস্ব টিমের পাশাপাশি থাইল্যান্ড থেকে ২৫ জনের একটি দল যোগ দিয়েছিলেন এই শুটিংয়ে। এরা সকলেই স্থানীয় বাসিন্দা। দুই দলের কেউই কারও ভাষা জানেন না! তার পরেও থাইল্যান্ডের মানুষের কাছ থেকে ‘রক্তবীজ ২’ টিম যা আদরযত্ন পেয়েছেন সে কথা বলতে গিয়ে উচ্ছ্বসিত জ়িনিয়া।
জানিয়েছেন, রকমারি থাই খাবারের কথা। কোনটা ছেড়ে কোনটা খাবেন বুঝতে পারছিলেন না তারা। তারই মধ্যে ডাল, জিরা আলু, ঢেঁড়শের তরকারি আর রুটির বন্দোবস্ত করেছিলেন থাইল্যান্ডবাসী।
জ়িনিয়ার আরও সংযোজন, “নায়ক-নায়িকাকে চোখে হারিয়েছেন তাদের স্পটবয়েরা। তাইল্যান্ডে যিনি মিমির স্পটবয় তার নাম আম! সেই আম নিজে থেকে নায়িকাকে ঘড়ি ধরে জল খাওয়ানোর দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছিলেন! যা দেখে মিমি পর্যন্ত হতবাক।”
একটা করে শট শেষ হচ্ছে। সেদি আম নামক ব্যাক্তি নাকি নানা স্বাদের পানীয় নিয়ে হাজির। তাইল্যান্ডে নানা স্বাদের ‘আইস ড্রিঙ্ক’ পাওয়া যায়।
কোনওটা গোলাপের আতর দিয়ে বানানো। কোনওটা কলা, পিচ বা আনারস দিয়ে। মিমির শট শেষ হলেই আম একেক বার একেক রকম পানীয় নিয়ে হাজির! না খেলে রীতিমতো অনুরোধ তার। প্রশ্নও, কেন খাচ্ছেন না মিমি?
আবীরের জন্য অবশ্য স্পটবয় নয়, স্পটগার্ল ছিলেন। এ দিকে, কলকাতায় তার স্পটবয়ের নাম শান্তনু। আবীর থাইল্যান্ডের স্পটগার্লকেও সেই নামেই ডাকতেন। অবাক কাণ্ড, মেয়েটি সাড়াও দিতেন! ওই স্পটগার্ল আবীরের মাথায় ছা়তা ধরার কাজকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন যে দোলনার দৃশ্যেও তিনি নায়কের পিছনে! আবীরের মাথায় ছাতা ধরবেন। শেষে নায়ক তাকে অনেক বুঝিয়ে কথায় কথায় মাথায় ছাতা ধরার কাজ থেকে বিরত রাখেন।
থাইল্যান্ডে দুটো গানের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। আবীর-মিমি ছবির প্রিক্যুয়েলেই ছিলেন। তাদের নিয়ে প্রেমের গান তৈরি হয়েছে। সিক্যুয়েলে নতুন সংযোজন অঙ্কুশ হাজরা-কৌশানী মুখোপাধ্যায়। তাদের নিয়ে দ্বিতীয় গান। গানটি ছবির গল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
ছবির কাহিনি-চিত্রনাট্যকারের কথায়, “খুব অল্প সময়ে দুটো গানের শুটিং করেছি আমরা। ২০ জন উড়ে গিয়েছিলাম দুই পর্বে। যদিও অভিনেতাদের আগে আমরা আর কিছু টেকনিশিয়ান শুটিংয়ের কয়েক দিন আগে পৌঁছে গিয়েছিলাম। যাতে সুন্দর লোকেশন বেছে রাখতে পারি। আমরাও অভিনেতাদের মতোই মধ্য রাতের বিমান ধরে ভোরে ব্যাংকক পৌঁছোই।”
আরএম