পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় আবু সালেক (৪০) নামে এক জেলের জালে ছোট বড় মিলিয়ে ৪টি বিরল প্রজাতির মাছ ধরা পড়েছে। যা স্থানীয়ভবে টিয়া মাছ বা প্যারট মাছ হিসেবে পরিচিত।বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বেলা ১১টার দিকে এ মাছগুলো আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের খান ফিস আড়তে নিয়ে আসা হয়।
এর আগে গতকাল বুধবার কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের পায়রা বন্দরের শেষ বয়া এলাকায় মাছগুলো ওই জেলের জালে ধরা পড়ে।
গত ৪ জুন চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে (এফবি আল্লাহর দোয়া- ৪) নামের একটি ট্রলারে ১৭ জন জেলে সাগরে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন। সমুদ্রে জাল ফেললে তখন অন্যান্য মাছের সাথে বিরল প্রজাতির এই ৪টি মাছ জালে ধরা পড়ে। যার ওজন প্রায় ৫ কেজি। নিলামের মাধ্যমে ৫০০ টাকা কেজি দরে এ মাছগুলো ২৫০০ টাকায় ক্রয় করেন আব্দুল্লাহ নামে এক পাইকারী মাছ ব্যবসায়ী।
উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে,মাছটি ‘scaridae’ পরিবারের। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘scaridae cetoscarus’। স্থানীয়ভাবে মাছটি প্যারট ফিশ বা টিয়া মাছ বা নীল তোতা নামে পরিচিত। বাংলাদেশে মাছটি বিরল। এ মাছ ভারত মহাসাগরে বেশি পাওয়া যায়। তবে দক্ষিণ চীন সাগরের ফিলিপাইন উপকূল পর্যন্ত এর বিচরণ রয়েছে।
মাছটি পাওয়া জেলে আবু সালেক বলেন, গতকাল বুধবার (১১ জুন) রাত ১২টার দিকে সাগরে জাল ফেলি। পরে ইলিশ এবং পোয়াসহ অন্যান্য মাছের সঙ্গে এই টিয়া মাছগুলো ধরা পড়ে। এর আগে এসব মাছ আমাদের জালে কখনো ধরা পরেনি। এই প্রথম ধরা পড়লো। তবে মাছগুলো পোয়া মাছের সঙ্গেই নিলামে বিক্রি করেছি।
নিলামে কিনে নেওয়া ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ বলেন, এই মাছগুলো বিক্রির জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হবে। ইতোমধ্যে মাছগুলো বরফ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আশা করি ভালো দামে বিক্রি করতে পারব।
এ বিষয় জানতে চাইলে মৎস্য ব্যবসায়ী ও খান ফিস আড়তের স্বত্বাধিকারী রহিম খান বলেন, এ ধরনের মাছ সচারাচর পাওয়া যায় না, অনেক আগেও একবার আমাদের আড়তে এসেছিল। তবে সাইজে অনেক ছোট। তবে মাছগুলো খেতে সুস্বাদু।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, মাছগুলো বাংলাদেশে দেখা যায় না। স্কারাস জুফার যা ধোফার প্যারোটফিশ নামেও পরিচিত। এ প্রজাতির মাছ পাথুরে আবরণ থেকে শেওলা খেতে অভ্যস্ত। শেওলার সঙ্গে ক্যালসিয়াম খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করায় মাছটির আঁশ খুব মজবুত ও পুরু হয়। এ মাছ সাধারণত ১২ থেকে ২০ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এক দশমিক ৩ মিটার বা ৪ ফুট ৩ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের হয়ে থাকে। মাছগুলোর দেহে তোতা পাখির মতো নীল ছোপ ছোপ দাগ এবং লেজের মাঝখানের অংশ উজ্জ্বল সোনালি-হলুদ রঙের হয়।
কেএন/এসএন