সেই ১৯৮৬ সাল থেকে শুরু। ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী সান্তোসের জার্সি গায়ে প্রথমবার মাঠে পা রাখা। এরপর থেকে কাজুয়োশি মিউরা নামের একজন কেবলই ছুটে চলেছেন ফুটবল মাঠের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে। গত ফেব্রুয়ারিতে বয়স ৫৮ পূর্ণ হয়েছে মিউরার। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী পেশাদার ফুটবলার তো হয়েছেন আগেই।
এবার সেই তকমা আরও একটু মজবুত করলেন। গত জুনে জাপানের চতুর্থ স্তরের ক্লাব সুজুকায় ধারে দেড় বছরের চুক্তি করেন মিউরা। তবে জানুয়ারিতে পায়ে চোট পাওয়ার পর থেকেই মাঠের বাইরে ছিলেন। মার্চে লিগ শুরু হলেও তাই প্রথম কয়েকমাস খেলাই হলো না তার। অবশেষে মিউরা মাঠে নামলেন রোববার। ইয়োকোহামার বিপক্ষে সুজুকার ২-১ গোলের জয়ে শেষ দিকে মাঠে নামানো হয় মিউরাকে।
অথচ এবারে পায়ের চোট বেশ ভোগাচ্ছিল তাকে। এমন গুঞ্জনও ছিল, এই ইনজুরি থেকেই অবসরে যাচ্ছেন কাজুয়োশি মিউরা। কিন্তু চোট আর বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ঠিকই আবার মাঠে ফিরলেন তিনি। শুধু তাইই না, জানালেন আরও কিছুদিন মাঠে থাকতে চান তিনি।
ম্যাচ শেষে কিং কাজু উপাধি পাওয়া এই ফরোয়ার্ড বলেন, “আরও ম্যাচ খেলতে চাই আমি, নিজের মানসিকতা মেলে ধরতে চাই। সবার সমর্থন ও সহায়তায় ফিট হয়ে উঠে এই ম্যাচটি খেলতে পেরেছি। এখান থেকে আবার নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে চাই।”
মিউরার পেশাদার ক্যারিয়ারের শুরু ১৯৮৬ সালে। ১৫ বছর বয়সে জাপান থেকে ব্রাজিলে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। সান্তোসের হয়ে হয় অভিষেক। এরপর ব্রাজিলে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত খেলে তিনি ফিরে আসেন নিজ দেশে। প্রথমবার ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে খেলার সুযোগ পান ১৯৯৪ সালে ইতালিয়ান ক্লাব জেনোয়ায়। পরে খেলেছেন ক্রোয়েশিয়ার দিনামো জাগরেবে। এছাড়া খেলেছেন অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগালেও।
জাপানের জাতীয় দলে তার অভিষেক ১৯৯০ সালে। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ১৩ ম্যাচ খেলে ১৩ গোল করেন কাজুয়োশি মিউরা। ১৯৯৮ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ১৪ গোল করেন তিনি। প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায় জাপান। কিন্তু তাকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে রাখা হয়নি। তাকে নিয়ে তখন বিতর্কের তোলপাড় পড়ে যায় জাপানে।
দেশের হয়ে ৮৯ ম্যাচে ৫৫ গোল করেছেন তিনি, এখনও যা জাপানের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। জাতীয় দলের জার্সিতে সবশেষ খেলেছেন ২০০০ সালে। তবে পেশাদার ফুটবলকে এখন পর্যন্ত বিদায় বলা হয়নি তার।
আরআর/এসএন