বাবা সঞ্জয় বাঙ্গারের মতোই ভারতের জার্সিতে ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখেছিলেন আরিয়ান বাঙ্গার। ইসলাম জিমখানা ক্লাবের হয়ে খেলেও সেই স্বপ্নকে কাছ থেকে ছুঁয়েছিলেন তিনি। তবে গত বছর জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় বদলে দেন আরিয়ান। লিঙ্গ পরিবর্তনের পর নতুন পরিচয়ে সামনে আসেন অনায়া বাঙ্গার নামে।
বর্তমানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন ইংল্যান্ডে, তবে সম্প্রতি ভারতে ফিরে এসেছেন তিনি। ফিরে এসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রতি ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলেটদের প্রতি সমর্থন জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন ২৩ বছর বয়সী অনায়া।
২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর আইসিসি ট্রান্সজেন্ডার ক্রিকেটারদের নারীদের দলে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সেই প্রতিবন্ধকতা দূর করতে এখন তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে চান অনায়া।
সম্প্রতি তিনি একটি আট পৃষ্ঠার বৈজ্ঞানিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন, যেখানে হরমোন থেরাপির এক বছর পর একজন ট্রান্স নারী অ্যাথলেট হিসেবে তার শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। রিপোর্টটি তিনি ম্যানচেস্টার মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি করেছেন। এতে তার পেশিশক্তি, সহনশীলতা, গ্লুকোজ ও অক্সিজেন ব্যবহারের হার বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, তার শারীরিক সক্ষমতা সিসজেন্ডার নারী অ্যাথলেটদের মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
অনায়া ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে বলেন, ‘এই প্রথমবার আমি এমন একটি বৈজ্ঞানিক রিপোর্ট শেয়ার করছি, যেখানে একজন ট্রান্স নারী অ্যাথলেট হিসেবে আমার শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের তথ্য রয়েছে।
গত এক বছরে নিয়মিত শারীরিক মূল্যায়নের মাধ্যমে সংগৃহীত এই ডেটা কেবল মতামত নয়, বাস্তব পরিমাপযোগ্য তথ্য তুলে ধরছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি এটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সাথে বিসিসিআই ও আইসিসিকে জমা দিচ্ছি। আমার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো—আলোচনা শুরু করা, ভয়ের ভিত্তিতে নয়, তথ্যের ভিত্তিতে। বিভাজন তৈরি নয়, বরং জায়গা তৈরি করা। আপনি একমত হোন বা না হোন, আমাকে শোনার জন্য ধন্যবাদ।’
অনায়া বলেন, ‘বিজ্ঞান বলছে আমি নারীদের ক্রিকেটে খেলার যোগ্য। এখন প্রশ্ন হলো—বিশ্ব কি সত্য শুনতে প্রস্তুত?’
উল্লেখ্য, অনায়ার বাবা সঞ্জয় বাঙ্গার ভারতের হয়ে ১২টি টেস্ট ও ১৫টি ওয়ানডে খেলেছেন। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
টিকে/টিএ