প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আগাম সতর্কবার্তা পৌঁছাতে টেলিযোগাযোগকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে দুর্যোগ বারবার মানুষের জীবন-জীবিকা, নিরাপত্তা ও উন্নয়নকে হুমকির মুখে ফেলে, সেখানে নির্ভরযোগ্য, বাস্তবভিত্তিক ও সহজলভ্য টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা শুধু গুরুত্বপূর্ণই নয়, বরং জীবন রক্ষাকারীও হয়ে উঠতে পারে।"
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে দুই দিনব্যাপী ‘জাতীয় জরুরি টেলিযোগাযোগ পরিকল্পনা ও সবার জন্য আগাম সতর্কতা’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার চারটি ধাপ— দুর্যোগ প্রশমন, প্রস্তুতি, প্রতিক্রিয়া এবং পুনরুদ্ধার— এই প্রতিটি স্তরেই টেলিযোগাযোগের গুরুত্ব অপরিসীম। যথাসময়ে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে পারলে জানমাল রক্ষা অনেকাংশে সম্ভব হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের অধিকাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকেও বাংলাদেশ একটি বড় চ্যালেঞ্জের দেশ। তাই সেল ব্রডকাস্ট প্রযুক্তি ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর কাছে সতর্কতা পৌঁছে দেওয়ার একটি তাৎক্ষণিক ও নির্ভরযোগ্য টুল হিসেবে কাজ করবে।
চেয়ারম্যান এমদাদ উল বারী আরও বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট, মোবাইল নেটওয়ার্ক ডাউন হয়ে যাওয়া কিংবা রাস্তাঘাট চলাচলের অযোগ্য হয়ে ওঠার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ অবস্থায় বিকল্প ব্যাকআপ ও টেকসই নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করা জরুরি।
অন্যদিকে, জাতিসংঘের বৈশ্বিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে আয়োজিত এই কর্মশালায় বাংলাদেশের জন্য জাতীয় জরুরি টেলিযোগাযোগ পরিকল্পনা এবং সেল ব্রডকাস্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আগাম সতর্কবার্তা পৌঁছানোর কৌশল, চ্যালেঞ্জ ও করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিইউ), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, আবহাওয়া অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ইউনিসেফ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর ও টেলিকম খাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধিরা।
এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কমিশনের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইকবাল আহমেদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা পূর্বপ্রস্তুতিমূলক কর্মসূচির (সাইক্লোন প্রিপেয়ার্ডনেস প্রোগ্রাম) পরিচালক আহমেদুল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান বক্তব্য দেন।
এসএন