দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সিরাজগঞ্জ জেলা ও রায়গঞ্জ উপজেলা বিএনপির ১৩ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে দলটির জেলা কমিটি। একই অভিযোগে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আরও ২১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক শেখ মোঃ এনামুল হকের স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে এসব নোটিশ ২১ জুন পাঠানো হলেও বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে ২৪ জুন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২০ জুন তাড়াশ উপজেলার শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজার জিয়ারতের সময় ওই নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে “টুকু ভাইয়ের সালাম নিন, দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দিন” স্লোগান দেওয়া হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে উদ্দেশ করে দেওয়া এই শ্লোগান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি বলে বিবেচিত হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এই পরিস্থিতিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এজন্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জেলা বিএনপির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের কাছে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০ জুন বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা একত্রে শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজার জিয়ারত ও জুমার নামাজ আদায় করেন। পরে জামায়াত নেতারা চলে গেলে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাজারসংলগ্ন মসজিদে মিলাদ মাহফিলে অংশ নেন। এরপর মাজারের পাশের একটি বিদ্যালয় চত্বরে মতবিনিময় সভা এবং রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়।
ঘটনার পরের দিন ২১ জুন রায়গঞ্জ উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নেতারা নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন এবং শ্লোগানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরপর ২২ জুন রায়গঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামী পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে।
শোকজপ্রাপ্ত নেতারা হলেনঃ জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও রায়গঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক দুলাল হোসেন খান, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শামসুল ইসলাম, জেলা বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ও রায়গঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভিপি আয়নুল হক, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা কামাল হোসেন, উপদেষ্টা আমিনুল বারী তালুকদার, যুগ্ম সম্পাদক ও রায়গঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ব্যারিস্টার আব্দুল বাতেন, নির্বাহী সদস্য রহিত মান্নান লেলিন, রায়গঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি খায়রুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস মণ্ডল, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি হাতেম আলী সুজন, সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম হিরণ, সাংগঠনিক সম্পাদক রুম বাদশা এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আব্দুল হাশেম মেম্বার।
এফপি/ টিকে