আওয়ামী ফ্যাসিবাদে সব ধরনের নাগরিক স্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছিল: তারেক রহমান

আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে বাংলাদেশকে সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বুধবার (২৫ জুন) আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।

বিবৃতিতে তারেক রহমান বলেন, নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দিবসটির তাৎপর্য অপরিসীম। প্রতি বছর ২৬ জুন জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক এই দিবস পালিত হয়। এ দিবসটি নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সংহতি জানানোর জন্য পালিত হয়।

তারেক রহমান বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরে অধীন জাতিগুলো ক্রমান্বয়ে স্বাধীনতা অর্জন করলেও সারাবিশ্বে সহিংসতা ও সংঘাত বন্ধ হয়নি। রক্তোন্মাদনা যেন দেশে দেশে এক ভয়ংকর হানাহানি ও রক্তারক্তিকে অব্যাহত রেখেছে। এ কারণে বিশ্বের অসংখ্য মানুষ নিহত ও আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রে স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী তাদের বিরোধীদের ওপর সীমাহীন ক্রোধে ভয়ানক দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। সেইসব দেশে নাগরিকদের জীবন ও সম্পদ মারাত্মক হুমকির মুখে। একনায়কদের দোর্দণ্ড প্রতাপে বিরোধী মতের মানুষদের গুম, খুনসহ মিথ্যা মামলায় এক অবর্ণনীয় বন্দিজীবন কাটাতে হয় বছরের পর বছর। বাংলাদেশে প্রায় ১৬ বছর ধরে চলেছে গণতন্ত্রকে বন্দি করে ভয়াবহ আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে বাংলাদেশকে সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল। মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ সব ধরনের নাগরিক স্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছিল। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নানা কালাকানুন দ্বারা ছিল শৃঙ্খলে বন্দি। এদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। চিকিৎসাধীন মুমূর্ষু দেশনেত্রীর সুচিকিৎসাকেও বর্বর আওয়ামী সরকার নির্দয়ভাবে বাধা প্রদান করেছিল। গোটা দেশটাই ছিল বাকরুদ্ধ, ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে আবদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের অগণতান্ত্রিক ও অসহিষ্ণু আচরণের প্রতিবাদ করলেই লেলিয়ে দেওয়া হতো পেটোয়া বাহিনী। মানবতাকে উচ্ছেদ করে আওয়ামী সরকারের পোষ্য সন্ত্রাসীরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করে বলেই নারী শিশুসহ সাধারণ মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছিল। একমাত্র গণতান্ত্রিক সমাজেই মানুষের সার্বিক অধিকার নিশ্চিত হয়। আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত হলেও গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও সুষ্ঠু চর্চার কর্মপ্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি।

মব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন ‘মব জাস্টিস’ নামে এক হিংস্র উন্মাদনা মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার পরিবেশকে বিপন্ন করবে। আর যেন একমাত্রিক রাষ্ট্রের পুনঃপ্রবর্তন না হয় সেজন্য গণতন্ত্রকে গতিশীল ও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। মানবতা, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সুমহান ঐতিহ্য আমাদের গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য গণতান্ত্রিক শক্তির অটুট ঐক্য বজায় রাখা অতীব জরুরি।

তারেক রহমান আরও বলেন, আমি তাই নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব নির্যাতিত মানুষকে সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। নির্যাতিতদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথে নানা প্রতিকূলতা বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। মানবিকবোধে উদ্বুদ্ধ বিশ্বের সব গণতন্ত্রকামী মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমেই নিষ্ঠুর নির্যাতনকারী গোষ্ঠী ও স্বৈরশাসককে পরাস্ত করা সম্ভব।

আরআর/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

গুমে রাজি না হওয়া কর্মকর্তাদের তথ্যও যেত শেখ হাসিনার কাছে Jun 25, 2025
কেবল মে মাসেই খালাস ৮৮ শতাংশ মামলার আসামি! Jun 25, 2025
‘১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়’ প্রস্তাবে সম্মতি দিল বিএনপি Jun 25, 2025
আমরা এমন এক জাতি, কোনদিন ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবো না Jun 25, 2025
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল নিয়ে যা বললো বিএনপি? Jun 25, 2025
নির্মাণে অনিয়ম; মহাখালীতে রাজউকের একাধিক উচ্ছেদ অভিযান! Jun 25, 2025
সেবার নামে বাড়তি খরচ, চট্টগ্রাম মেডিকেলে অভিযোগ তদন্তে অভিযান! Jun 25, 2025
img
বিএনপির শর্তে দেশের চেয়ে দলের স্বার্থ বেশি প্রাধান্য পাওয়ার চিত্র ফুটে ওঠে : সারজিস Jun 25, 2025
img
২০৫০ সালের মধ্যে বাস্তুচ্যুত হতে পারেন ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষ Jun 25, 2025
img
যশোরে জুতার নিচে লুকানো ৮৬ লাখ টাকার স্বর্ণসহ যুবক আটক Jun 25, 2025
img
শ্রুতি হাসানের টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাকড Jun 25, 2025
img
‘স্কুলের বাচ্চাদের মতো মারামারি করছিল ইরান-ইসরায়েল’ Jun 25, 2025
img
২০ বছরের জটিলতা কাটাতে দুই মাস সময় চাইলেন নারায়ণগঞ্জের ডিসি Jun 25, 2025
img
‘নির্বাহী বিভাগকে ক্ষমতাহীন করার কোনো মানে হয় না’ Jun 25, 2025
img
জামায়াত আমিরের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা Jun 25, 2025
img
নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আফ্রি সেলিনা, ফিরতে চান দেশে Jun 25, 2025
img
মৃত্যুহীন দিনেও বাড়ল করোনা সংক্রমণ Jun 25, 2025
img
আইএইএর সঙ্গে ইরানের সব পারমাণবিক সহযোগিতা স্থগিত Jun 25, 2025
img
রোনালদোদের কোচ ও তার সহকারীদের সরিয়ে দিল আল নাসর Jun 25, 2025
img
ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট দিতে সক্ষম এনসিপি, বললেন হাসনাত Jun 25, 2025