এআইয়ের কারণে মাইক্রোসফট থেকে বাদ পড়ছে ৯ হাজার কর্মী

বিশ্বব্যাপী বড় পরিসরের ছাঁটাই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মাইক্রোসফট সম্প্রতি জানিয়েছে, তারা তাদের মোট কর্মীর সংখ্যা প্রায় চার শতাংশ কমাবে। এই সিদ্ধান্তে প্রায় ৯ হাজার কর্মী চাকরি হারাতে পারেন। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগানো এবং পুরো সংগঠনকে বেশি দক্ষ ও খরচ সাশ্রয়ী করে গড়ার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মাইক্রোসফটের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, বাজার পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের কোম্পানি ও টিমগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত রাখতে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

জানা যায়, কোম্পানির ২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী বৈশ্বিক কর্মীসংখ্যা ছিল প্রায় ২ লাখ ২৮ হাজার, যার ভিত্তিতে এই ছাঁটাই করা হচ্ছে।

এর আগেও চলতি বছরের মে মাসে মাইক্রোসফট প্রায় ৬ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছিল। এবারও ছাঁটাইয়ের মূল লক্ষ্য হিসেবে দেখানো হয়েছে ব্যবস্থাপনার স্তর হ্রাস এবং এআই প্রযুক্তিকে পণ্যে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন।

প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা এমন কর্মপরিবেশ তৈরি করতে চায় যেখানে কর্মীরা এআই প্রযুক্তির সহায়তায় আরও সৃজনশীল ও অর্থবহ কাজের সুযোগ পাবেন। মাইক্রোসফটের বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা সব সময় আমাদের ব্যবসার কৌশলগত প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মীবিন্যাসে পরিবর্তন এনেছি, এমনকি ভালো সময়েও।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চ্যাটজিপিটি এবং অন্যান্য জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তির আবির্ভাবের পর থেকেই মাইক্রোসফট দ্রুততার সঙ্গে এআই খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ওপেনএআই-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বহু পণ্যে এআই সংযুক্ত করেছে, যার জন্য প্রচুর অবকাঠামোগত ব্যয় হয়েছে। এ ব্যয় সামাল দিতে এবং ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রতিষ্ঠানটি কর্মীসংখ্যা কমিয়ে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল নিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ছাঁটাইকৃত কর্মীদের জন্য সেভারেন্স প্যাকেজ, স্বাস্থ্যবীমা সুবিধা ও নতুন কর্মসংস্থানের জন্য পরামর্শ প্রদানসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করা হবে।

প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্ত কেবল এককভাবে তাদের নিজেদের জন্য নয়, বরং এটি বিশ্ব প্রযুক্তি খাতে চলমান বড় পরিবর্তনেরই একটি অংশ। এআই, অটোমেশন এবং খরচ নিয়ন্ত্রণ—এই তিনটি মূল উদ্দেশ্য সামনে রেখে আজকের প্রযুক্তি জগত পুনর্গঠনের পথে হাঁটছে। গুগল, মেটা ও অ্যামাজনের মতো অন্যান্য বড় কোম্পানিও ইতিমধ্যে একই ধরনের ছাঁটাই ও পুনর্গঠনের পথে এগিয়েছে।


পিএ/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
কর্মচারীদের বিক্ষোভের মুখে দাবি মেনে নিল এনাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ Jul 03, 2025
img
জুলাই সনদ: মুক্তিযুদ্ধকে সবার উপরে রেখে ‘রাজনৈতিক দলিল’ হিসেবে চায় বিএনপি Jul 03, 2025
img
অনন্যাকে কষ্ট দিয়ে সারার সঙ্গে নতুন সম্পর্কের কথা বললেন আদিত্য Jul 03, 2025
img
লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে শাকিবের সিনেমা দেখেন অভিনেতা আরশ খান Jul 03, 2025
img
এবার মানুষ রাজপথে নামলে আর কাউকে ক্ষমা নয়: নাহিদ ইসলাম Jul 03, 2025
img
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল পর্তুগিজ তারকা দিয়েগো জোতার Jul 03, 2025
img
রামের চরিত্রে রণবীর কাপুর, প্রকাশ্যে ‘রামায়ণ: পার্ট ওয়ান’-এর প্রথম ঝলক Jul 03, 2025
img
লিটন আর কত সুযোগ পাবেন, ‘কিছুই বলার নেই’ Jul 03, 2025
img
আশুরা মিছিলে নিরাপত্তায় নিজস্ব কর্মী রাখার পরামর্শ ডিএমপির Jul 03, 2025
img
প্রেমের কাব্যিক ভাষ্য নিয়ে আসছে ‘আঁখো কি গুস্তাখিয়াঁ’, ট্রেইলারে সবার নজর কাড়লো নতুন জুটি Jul 03, 2025
img
ডেঙ্গু মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ১৯ হাজার কিট দিল চীন Jul 03, 2025
img
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নিয়ে শব্দও খরচ করতে ইচ্ছুক না : উমামা ফাতেমা Jul 03, 2025
img
‘স্কুইড গেম ৩’কে পিছে ফেলে পঞ্চায়েত এখন শীর্ষে Jul 03, 2025
img
তিন দশক পর মিয়ানমারে ফের রচিত হলো ইতিহাস Jul 03, 2025
img
ধূমপান দৃশ্য নিয়ে রাশমিকা স্পষ্ট বার্তা Jul 03, 2025
img
হংকংকে পরাজিত করে বাংলাদেশের দুর্দান্ত সূচনা Jul 03, 2025
img
ভেঙ্কি আটলুরি-সুরিয়া জুটি নিয়ে আসছে পরিবারকেন্দ্রিক সিনেমা 'বিশ্বনাথন অ্যান্ড সন্স' Jul 03, 2025
img
এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা একতরফাভাবে প্রণয়ন করা সমীচীন হবে না : মির্জা ফখরুল Jul 03, 2025
img
বরিশালের সাবেক মেয়র খোকনসহ ১৯ কর্মকর্তা দুদকের ফাঁদে Jul 03, 2025
img
বলিউডে হঠাৎ উত্থান, তারপর নিঃশব্দ পতন: কোথায় হারিয়ে গেলেন এই আলোচিত মুখগুলো? Jul 03, 2025