তাহসান ও মিথিলা ২০০৬ সালে ৩ আগস্ট বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। দুজনের প্রায় ১১ বছরের সংসারের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হয় ২০১৭ সালের অক্টোবরে। আইরা তেহরীম খান তাহসান-মিথিলা দম্পতির একমাত্র সন্তান। তাহসান মিথিলার পরিচয় গানের মাধ্যমে।
তাহসান তখন ব্ল্যাক ব্যান্ডের গায়ক। এক বন্ধুর সঙ্গে তাহসানের আড্ডায় গান শুনতে যান মিথিলা। এরপর ধীরে ধীরে সম্পর্ক পরিণয়ে গড়ায়।
বিচ্ছেদের পর কেমন কঠিন সময় পার করেছেন ৮ বছর পর মিথিলা সেই ‘সময়কাল’ তুলে ধরলেন এক পডকাস্ট অনুষ্ঠানে।
এই পডকাস্টে জানিয়েছেন তাহসান ও তাঁর বিচ্ছেদ কেন মানুষ সহজে মেনে নিতে পারেনি। শুধু তাই নয় সামাজিক মাধ্যমে একশ্রেণীর মানুষ যারা বাজে মন্তব্য করে তাদের বিষয়েও কথা বলেছেন।
মিথিলা বলেন, ‘যে কোনও বিচ্ছেদ বা যে কোনো সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া সহজ না খুবই কঠিন। বন্ধু বা এটা যে কোনো ক্ষেত্রে হতে পারে।
আমি ছিলাম তখন অনেক অল্পবয়সী এবং তরুণী মা। আমি যে কোনো একটা ভালো মন্দ বিচার করবো বা কোনো একটা সিদ্ধান্তে আসবো, সেটার শক্তিই আমার ছিল না। কারণ আমার একটা ১ বছরের বাচ্চা। আমার মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না, যেখানে আমি কোনো একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো নিজের জীবনের।’
তাহসান ও মিথিলার বিচ্ছেদ ছিল প্রায় জাতীয় ইস্যু, এর কারণ হিসেবে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘এটা শুধু যে আমার পারসোনাল ইস্যু ছিল তা নয়, এটা ছিল ন্যাশনাল ইভেন্ট।
এখন যখন ভাবি সেটা হাসি পায়। আমরা যখন কাজ শুরু করি তখন মানুষ আমাদের দেখতো শুধু টেলিভিশনের পর্দায়, এতো সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। তারা বাইরে থেকে আমাদের দেখছে, অনেক সুন্দর লাগছে। দুটো মানুষকে একসাথে দেখতে ভালো লাগছে। তাদের বাচ্চা হয়েছে। বাইরে থেকে মানুষ এই পুরোটা ভেবেছে।’
বিচ্ছেদের ঘটনা পাবলিক ইভেন্ট হওয়ার কারণ হিসেবে মিথিলা উল্লেখ করেন, ‘কিন্তু বাস্তবে মানুষের জীবন তো এমন না। অনেক আপস অ্যান্ড ডাউনস থাকে। এটাই বাস্তব সত্য। অন্য ৮-১০ টা মানুষের মতোই আমাদের জীবন। সেই জায়গা থেকে হয়তো পারসোনালি মানুষে একটু বেশি নিয়ে নিয়েছিল। আর তখন সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেক মানুষের এনগেজমেন্ট। সেজন্য আমার মনে হয় পাবলিক ইভেন্ট হয়ে গেছিল আমাদের ইভেন্টটা।’
তাদের বিচ্ছেদে অনেকেই আহত হয়েছিল জানিয়ে মিথিলা বলেন, ‘কেউ এটা আশা করেনি। কারণ, অনেকের ক্ষেত্রে অনেক ঝামেলার কথা শোনা যায়। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে এসব কিছুই শোনা যায়নি, আমরা ছিলাম প্রাইভেট মানুষ। আমাদের কথা আমরা কোথাও শেয়ার করতাম না, তাই এটা মানুষের কাছে শকড ছিল। এখন আস্তে আস্তে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখতে মানুষ ওটা মেনে নিয়েছে।’
বিচ্ছেদ পরবর্তী সময়ে একশ্রেণির মানুষ মিথিলাকে নিয়ের বাজে মন্তব্যও করেন, যারা সহসাই একধরনের মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে করেন। এদের সম্পর্কে মিথিলা বলেন, ‘এখন যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলের অ্যাকসেস আছে, তাই মানুষ বাজে মন্তব্য করা, মানুষকে ছোট করা-এসব সহজেই করতে পারে মানুষ। এটা খুবই দুঃখজনক। তোমাকে যদি আমার ভালো না লাগে, আমার কিন্তু অধিকার নেই তোমাকে গালি দেওয়ার। আমি বাইরে থেকে যদি কারো সম্পর্কে কোনো কিছু শুনি, সেটা সম্পর্কে আমি যদি ধারণা করে খারাপ মন্তব্য করি এটা তো ঠিক না। এই অধিকার কারো নেই। এটা ঠিক না।’
আইরা তেহরীম খান তাহসান-মিথিলা দম্পতির একমাত্র সন্তান। তাহসান মিথিলার পরিচয় গানের মাধ্যমে। তাহসান তখন ব্ল্যাক ব্যান্ডের গায়ক। এক বন্ধুর সঙ্গে তাহসানের আড্ডায় গান শুনতে যান মিথিলা। এরপর ধীরে ধীরে সম্পর্ক পরিণয়ে গড়ায়। বিয়ের পর এ জুটি একাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন। ‘আমার গল্পে তুমি’, ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস’, ‘ল্যান্ডফোনের দিনগুলোতে প্রেম’, ‘মধুরেন সমাপয়েত’ নাটকসহ বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেন এই জুটি। নাটক ছাড়াও এ জুটি একসঙ্গে গানও গেয়েছেন।
এফপি/এসএন