ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ এবং সাবেক যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার সরকারকে গ্রেফতার করতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
রোববার (৬ জুলাই) বিকেলে নোয়াখালীর সেনবাগে এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আমি হারুন ও বিল্পবের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। এখনো তারা গ্রেপ্তার হয়নি। যে অন্যায় তারা করেছে, আমি আজকের অনুষ্ঠান থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে বলবো তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করুন। তারা কোথায় আছে তাদের খুঁজে বের করেন। আওয়ামী লীগের পেতাত্মারা যদি তাদেরকে লুকিয়ে রাখে তাদেরকেও গ্রেপ্তার করেন এবং হারুন, বিল্পবকেও গ্রেপ্তার করেন।
জানা গেছে, ২০১১ সালের ৬ জুলাই শেরেবাংলা নগরে দলীয় কর্মসূচি পালনকালে নির্মম হামলার শিকার হন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। ওই দিন ডিবির তৎকালীন অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ ও ডিএমপির অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার তার ওপর হামলা চালিয়ে মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করেন এবং হত্যাচেষ্টাও চালান বলে অভিযোগ। দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট ফারুক নিজেই বাদী হয়ে হারুন ও বিপ্লবসহ অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিগত এক যুগ ধরে এই ঘটনার বিচার দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে আসছে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলো।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আমার এই বয়সে এখনো হারুন-বিপ্লবের সাথে লড়াই করার শক্তি আল্লাহ দিয়েছেন। আমাকে নিয়ে আপনাদের কোনো দুশ্চিন্তা নাই। যাকে ধানের শীষ হাতে নিয়ে এই সেনবাগে পাঠাবেন তার ভোট আমরা করবো। কিন্তু আপনারা শুনতে বাধ্য— সেনবাগে যাদেরকে দোকান থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, যাদেরকে একদিনের জন্যও সেনবাগ কলেজে পা রাখতে দেওয়া হয়নি, কিংবা যারা মাইজদী কারাগারে সাতদিন এক বেলা খেয়ে বন্দিজীবন কাটিয়েছে— তাদের কথাও শুনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বেশি কিছু বলে কাউকে উসকাতে চাই না। তবে যারা সেনবাগে এমপি হতে চায়, আসুন—বুকে বুক মিলিয়ে দাঁড়াই। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যারা নিপীড়নের শিকার হয়েছে, তাদের প্রকৃত মূল্যায়ন করতে হবে। সৌদি আরব থেকে উড়ে এসে প্লেনে নামলে নেতা হওয়া যায় না, টাকা দিয়ে নেতা কেনা যায় কিন্তু কর্মী কেনা যায় না। আমার এখনো টিকে থাকার একটাই শক্তি— আমার ঈমানের জোর।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আমি পার্লামেন্টে বলেছি খালেদা জিয়াকে পুটলি বাঁধতে হবে না একদিন না একদিন আপনাকে পুটলি বেঁধে ভারত পাঠিয়ে দেব। ১২ বছর আগে যে কথা বলেছি বাংলাদেশের মানুষ তা প্রমাণ করেছে। শেখ হাসিনাকে পুটলি বেঁধে ভারত পাঠিয়ে দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, জনগণ আপনাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা বাস্তবায়ন করুন। মৃত মানুষের ভোট এদেশে আর হবে না। আমার ভোট আমি দিব যাকে খুশি তাকে দিব। আমার নেতা তারেক রহমান বলেছেন- আর মৃত ব্যক্তির ভোট নয়, এমন ভোট হবে যেন বিএনপিকে সরকার গঠন করবে। লন্ডন বৈঠকের পর আপনার কাছে চেয়েছি আর কোনো ষড়যন্ত্র হবে না। তাই বলছি দ্রুত নির্বাচন দিন। স্থানীয় সরকার নয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিন।
এ সময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো, সদস্য সচিব সাবেক মেয়র আলহাজ্ব হারুনুর রশিদ আজাদ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়াসহ সেনবাগ উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসএন