অরণ্যের আহ্বান যেন আরও গম্ভীর, আরও রাজকীয় হয়ে ফিরছে। দক্ষিণ ভারতের আলোচিত চলচ্চিত্রকার ঋষভ শেঠির জন্মদিনে প্রকাশিত হলো “কান্তারা : অধ্যায় ১”-এর প্রথম ঝলক। সেই এক ঝলকেই শুরু হয়েছে প্রবল উত্তেজনা আর আলোড়ন।
প্রকাশিত পোস্টারে দেখা যায় এক যোদ্ধার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, হাতে কুড়াল আর ঢাল—পোস্টারের পটভূমি জুড়ে আগুনের মতো জ্বলন্ত আবহ আর লোককথার রহস্যময়তা। লিখা আছে, “যেখানে জন্ম নেয় কিংবদন্তি, সেখানে গর্জে ওঠে অরণ্যের আওয়াজ।” এই পোস্টার যেন এক পৌরাণিক বীরগাথার আমন্ত্রণপত্র।
২০২২ সালে মাত্র ১৬ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত মূল “কান্তারা” ছবি বক্স অফিসে ৪০০ কোটি রুপি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সেই বিপুল সাফল্যের পর এবার নির্মাতারা ফিরছেন তারই শিকড়ের গল্প নিয়ে। “অধ্যায় ১” আসলে একটি প্রিক্যুয়েল—যা তুলে ধরবে কান্তারা জগতের জন্মকথা। আগামী ২ অক্টোবর ২০২৫ সালে মুক্তি পাবে এই ছবি।
এই সিনেমার শুটিংয়ে ব্যবহৃত হয়েছে ২৫ একর জমি। প্রায় ৫০০ যোদ্ধা আর ৩ হাজার অতিরিক্ত অভিনেতা নিয়ে শ্যুট হয়েছে যুদ্ধের দৃশ্য, যার জন্য প্রায় দেড় মাস ধরে টানা কাজ হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এই বিশাল আয়োজনের মাধ্যমে নির্মাতারা “বাহুবলী” কিংবা “কেজিএফ”-এর মতো একটি মহাকাব্যিক ক্যানভাস তৈরি করতে চান।
তবে ছবির শুটিং চলাকালে কিছু বিতর্কও তৈরি হয়েছে। শোনা গিয়েছিল, মানি রিজার্ভারে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। যদিও নির্মাতারা সেই গুজব অস্বীকার করেছেন। তবে নির্মাণ চলাকালে অন্তত তিনজন কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা সত্যি। এই শোকের ছায়া প্রকল্পের সাফল্যের আকাঙ্ক্ষাকেও বিষণ্ণ করেছে।
অনেক সময় দেখা যায়, প্রিক্যুয়েল বা সিক্যুয়েল দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে না। তবু “কান্তারা : অধ্যায় ১” নিয়ে আশাবাদী ভক্তরা। কারণ এর পেছনে আছে ঋষভ শেঠির শক্তিশালী উপস্থিতি, মূল চলচ্চিত্রের গড়া জাতীয় পুরস্কারজয়ী ঐতিহ্য, আর এক বুনো-আধ্যাত্মিক কাহিনীর প্রতিশ্রুতি।
এই সিনেমা শুধু আরেকটি প্রিক্যুয়েল নয়—এটি হতে পারে এক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অংশ। আদিবাসী আধ্যাত্মিকতা, প্রাকৃতিক উন্মাদনা আর যোদ্ধার আত্মিক রূপান্তর মিলে “কান্তারা : অধ্যায় ১” গড়ে তুলতে পারে এমন এক জগৎ, যা থেকে ফিরতে চাইবেন না দর্শক।
এফপি