চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা শঙ্কিত করে তুলছে ভারতকে। এমনই আভাস মিলেছে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহানের সাম্প্রতিক বক্তব্যে।
তিনি বলেছেন, চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নিজেদের স্বার্থে একে অন্যের প্রতি ঝুঁকছে। এই ঘনিষ্ঠতা ভারতের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ভারতের চিন্তক প্রতিষ্ঠান অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান (সিডিএস)।
জেনারেল চৌহান বলেন, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংকট বহিরাগত শক্তিদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দিচ্ছে। ঋণ–কূটনীতির সাহায্যে প্রভাব বিস্তারের মধ্য দিয়ে তারা ভারতের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। পাশাপাশি ঘন ঘন সরকার পরিবর্তন এবং সেইসঙ্গে তাদের আদর্শচ্যুতি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, এই প্রবণতা ভারতের জন্য বড় এক সমস্যা। সম্প্রতি চীনের কর্মকর্তারা সে দেশে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সম্মেলনে মিলিত হয়েছিলেন। তিনটি দেশই নিজেদের স্বার্থে একে অন্যের কাছাকাছি আসছে। এই নৈকট্য ভারতের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
চীন ও পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা অবশ্য বহু পুরোনো। কিন্তু, রাজনৈতিক পালাবদল, ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। পরিস্থিতিতে চীন–পাকিস্তান–বাংলাদেশের কাছাকাছি আসা জেনারেল চৌহানকে সন্দিহান করে তুলেছে। তিনি মনে করছেন, এই তিন দেশের ঘনিষ্ঠতা ভারতের চিন্তা বাড়াতে পারে। ভারতের স্থিতিশীলতার জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে।
অনুষ্ঠানে জেনারেল চৌহানকে পাকিস্তান–ভারত সাম্প্রতিক সংঘাতের সময় চীনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, ওই সংঘাতে পাকিস্তানকে চীন কতটা ও কীভাবে সমর্থন দিয়েছে, সহায়তা করেছে, তা বলা খুবই কঠিন। ওই সংঘাতের সময় উত্তর সীমান্তে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। তবে, ঘটনা হলো পাকিস্তান তাদের প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বেশির ভাগটাই চীন থেকে নেয়। সে কারণে পাকিস্তানে চীনের উপস্থিতি থাকার কথা; বিশেষ করে সংঘাত ও সংঘর্ষের সময়। সেটা কতটা ছিল এবং সমর্থন বা সহায়তার চরিত্র কেমন ছিল, তা বলা সহজ নয়।
ইউটি/এসএন