মানবাধিকারকর্মীদের নীরবতার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক জায়গায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত থাকলেও তা উপেক্ষা করা হয়। আর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো প্রায়ই চুপ থাকে।’
সম্প্রতি রাজনৈতিক বিশ্লেষক মঞ্জুরুল আলম পান্নার ইউটউব চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘বিশেষ করে আমেরিকা যখন কোনো দেশে যুদ্ধ সৃষ্টি করে বা যুদ্ধে জড়ায়, তখন যে মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটে, সেগুলো আর মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে স্বীকৃতি পায় না। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় যে ভয়াবহ প্রাণহানি ঘটেছে, তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন। অথচ সবাই চুপ।’
তিনি অভিযোগ করেন, অধিকাংশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে চলে এবং সেই অর্থায়নের কারণেই তাদের নিরবতা। যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে কেউ কিছু বলবে না—এটা আজ আন্তর্জাতিকভাবে প্রায় স্বীকৃত। মানবাধিকার আন্দোলনের শুরুই হয়েছিল সমাজতন্ত্রকে দমন করার লক্ষ্যে। ফলে এ আন্দোলনের অনেকাংশই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের আমলেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। তবে বেশিরভাগ মানবাধিকার সংগঠন সে বিষয়ে নীরব রয়েছে। যেসব সংগঠন ফান্ডিংয়ের বাইরে আছে, তারাই কেবল নিরপেক্ষভাবে কথা বলার চেষ্টা করে। তবে তাদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা না থাকলেই কেবল সেটা সম্ভব।
মনজিল মোরসেদ দাবি করেন, ‘আমাদের কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই। ফলে আগের সরকারের আমলে আমরা যেমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সরব ছিলাম, বর্তমান সরকারের আমলেও তেমনই আছি।’
বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মনজিল মোরশেত। তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ বুদ্ধিজীবী সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। যার ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কথা বলছেন না। তবে এটা চিরস্থায়ী হবে না। কিন্তু তারা একসময় বলবেন সেটা মানসিক চাপই হোক কিংবা বিবেকের তাড়নায়, তারা কথা বলবেই।’
গত ১১ মাসে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আগের সরকারের সময় ঘুম, গুম, খুন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অপব্যবহার, মিথ্যা মামলা ও বিরোধী দলের ওপর নিপীড়নের মতো ব্যাপার ছিল। বর্তমানে সেই ধরনের খুনের ঘটনা কম হলেও, আইনের শাসন লঙ্ঘিত হচ্ছে। এখনও ঘটনা ছাড়াই মামলা হচ্ছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ।’
আরআর/টিকে