তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে কয়েকটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। আজ রোববার (১৩ জুলাই) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের ১২তম দিনের বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল বিচার বিভাগনির্ভর। এবার আমরা চাই, বিচার বিভাগকে সম্পৃক্ত না করে একটি জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিকল্প কাঠামো গড়ে তোলা হোক, যার মাধ্যমে একজন গ্রহণযোগ্য প্রধান উপদেষ্টাকে মনোনীত করা সম্ভব হবে।
বিএনপির পক্ষ থেকে আলোচনায় যেসব বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে--
সংসদ বিলুপ্ত হওয়ার ৩০ দিন আগে রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একজন উপযুক্ত নাগরিককে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ।
ঐকমত্য না হলে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি চার সদস্যের কমিটি (প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার) গঠন করে প্রধান উপদেষ্টার নাম প্রস্তাব।
রাষ্ট্রপতি এই কমিটির সভাপতি হলে তাঁর কোনো ভোটাধিকার থাকবে না; তবে স্পিকার সভাপতি হলে ভোটাধিকার থাকবে।
তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধি যুক্ত করে পাঁচ সদস্যের আরেকটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব, যার সভাপতি হবেন রাষ্ট্রপতি এবং তাঁর ভোটাধিকার থাকবে।
আরও একটি বিকল্প প্রস্তাবে, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার ও ৫ শতাংশ ভোট পাওয়া বিরোধী দলগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সুপারিশ কমিটি গঠনের কথা বলা হয়।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যদি এসব প্রস্তাবেও ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব না হয়, তাহলে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিদের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় ফিরে যাওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে মনোনয়ন দেবেন প্রধান চার পদে থাকা রাজনীতিকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পক্ষে বিএনপি নয়। তবে একান্ত বাধ্য হয়ে গেলে, ‘শেষ বিকল্প’ হিসেবে কোনো নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে দায়িত্ব দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
এদিনের আলোচনায় বিএনপিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। উপস্থিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলন ইত্যাদি।
কমিশনের পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আরআর