রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব সম্প্রদায়েরও বড় দায় আছে, এ সংকট নিরসনে সবাইকে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা।
সোমবার (১৪ জুলাই) কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক বিশেষ সভা ও পরিদর্শনে অংশ নেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, বীর প্রতীক।
দিনব্যাপী কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তারা জানান, রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা হ্রাস পাওয়া মানবিক সংকট ডেকে আনতে পারে, যা শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা বিশ্বের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। একইসঙ্গে ক্যাম্পে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং ক্ষতিগ্রস্ত কাঁটাতারের বেড়া মেরামতেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সোমবার বেলা ১২টায় কক্সবাজার শহরের বিয়াম ফাউন্ডেশন আঞ্চলিক কেন্দ্রে শুরু হয় ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ’ বিষয়ক বিশেষ সভা। সভায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, এপিবিএন, আনসার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।
দুপুর ২টা পর্যন্ত চলা এই সভায় সীমান্ত পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা সংকট এবং মাদক পাচার ইস্যুতে গভীর আলোচনা হয়। সভা শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘মাদক পাচারকারীরা ধরা পড়লেও তাদের পেছনে থাকা গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এবার এসব গডফাদারের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সোমবার বিকেল ৩টার দিকে দুই উপদেষ্টা গাড়িযোগে উখিয়ার ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। সেখানে তারা ক্যাম্পের অবস্থা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে উঠে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘বাংলাদেশ মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু এ সংকট বাংলাদেশের একার না— বিশ্ব সম্প্রদায়েরও বড় দায় রয়েছে। এতদিন যেভাবে আন্তর্জাতিক সহায়তা এসেছে, তা যদি কমে যায়, তাহলে সংকট আরও জটিল হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সরকারিভাবে এই বাস্তবতাই বারবার তুলে ধরছি। ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা নেয়া হবে।’
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তার জন্য যে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হয়েছিল, তা এখন অনেক জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কীভাবে তা মেরামত করা যায় এবং কীভাবে ক্যাম্পের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা যায়, তা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
ইউটি/টিএ