বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত, চিকিৎসকদের জন্য ৪৮তম স্পেশাল বিসিএস এবং পরীক্ষাসমূহে নানা অনিয়মের প্রতিবাদে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘পিএসসি সংস্কার আন্দোলন’ এবং ‘পিএসসি সংস্কার আন্দোলন চিকিৎসক পরিষদ’-এর ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে তারা স্লোগান দেন— “জুলাইয়ে অঙ্গীকার, পিএসসি সংস্কার; প্রশ্নফাঁসের সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও; সবার আগে দরকার, পিএসসি সংস্কার; এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন; জুলাই আবার এসেছে রক্তে, আগুন লেগেছে; প্রহসনের বিসিএস, মানি না মানবো না; আবেদ আলীর সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও” ইত্যাদি।
চাকরি প্রত্যাশীদের ১১ দফা দাবি :
১. ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল অসঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় তা সংশোধন করে পুনরায় প্রকাশ করতে হবে।
২. ৪৮তম বিশেষ বিসিএস (স্বাস্থ্য) যৌক্তিক সময়ে পুনঃনির্ধারণ করতে হবে; চিকিৎসকদের প্রার্থীতার জন্য বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে; ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য ন্যূনতম ৪ মাস সময় দিতে হবে।
৩. ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে এবং ৪৬তম বিসিএস বাতিলের সম্ভাবনা নেই—এমন নিশ্চয়তা দিতে হবে।
৪. ‘নন ক্যাডার বিধি-২০২৩’ সংশোধন (প্রয়োজন সাপেক্ষে বাতিল) করে মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সবার চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. ৪৫তম বিসিএস থেকে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ১০০ করতে হবে এবং লিখিত পরীক্ষার খাতা পুনঃনিরীক্ষার সুযোগ চালু রাখতে হবে।
৬. কমিশনকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আস্থাশীল রাখতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
৭. মৌখিক পরীক্ষার পূর্বে অনলাইনে পুনরায় ক্যাডার পছন্দক্রম (রি-চয়েজ) করার সুযোগ দিতে হবে।
৮. স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার নম্বর ফলাফল প্রকাশের সময়, এবং লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর চূড়ান্ত ফলাফলের সময় প্রকাশ করতে হবে।
৯. ফৌজদারি মামলা বা রাষ্ট্রদ্রোহিতায় দণ্ডিত হওয়ার সুস্পষ্ট অভিযোগ ছাড়া চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত কোনো প্রার্থীর গেজেট প্রকাশে বাধা দেওয়া যাবে না।
১০. কমিশনে সদস্য নিয়োগে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বিশেষজ্ঞ মহলের পরামর্শে পদক্ষেপ নিতে হবে।
১১. লিখিত খাতার মূল্যায়নে গতিময়তা, নিরাপত্তা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে কমিশনে বসেই খাতা দেখার ব্যবস্থা করতে হবে।
চিকিৎসক পরিষদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে :
১. চিকিৎসকদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।
২. আসন্ন ৪৮তম বিসিএসে ৩২ বছরের বেশি বয়সি চিকিৎসকদের অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।
৩. ৪৮তম বিসিএস যৌক্তিক সময় পেছাতে হবে এবং ৩২ বছরের বেশি চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দিতে হবে।
৪. সব বিসিএস পরীক্ষার লিখিত ও ভাইভা নম্বর প্রকাশ করতে হবে।
পিএসসি সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক সাবেক বুয়েটে শিক্ষার্থী সিরাজুস সালেহীন সিয়ন বলেন, “আমরা আমাদের দেওয়া ১১ দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পিএসসি’র সংস্কার চাই। একই সঙ্গে সংস্কারের আগ পর্যন্ত পিএসসি’র সব নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করতে হবে।”
এফপি/টিএ