জনপ্রিয় অ্যাক্টিভিস্ট ও লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন, আমরা সবাই মিলে যেভাবে প্রগ্রাম করব দেশ সেভাবেই চলবে। দেশ কোনো প্রাণী নয়, কোনো সব প্রাণসত্তা না। বাংলাদেশে আমরা কখনো আওয়ামী বাকশালীদের রাজনীতি করতে দেব না। এভাবেই বিপ্লবের পরে নতুন দেশ, নতুন সমাজ, নতুন রাষ্ট্র নির্মিত হয়।
বুধবার (১৬ জুলাই) সংবাদমাধ্যম বাংলা এডিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সারা বাংলাদেশ এক প্রাণ হয়ে আমরা ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনকে ছুড়ে ফেলে দিতে সক্ষম হলাম। আমি বিপ্লবের সময় থেকেই বলতাম, যে দিন খোদাতালার রহম হবে, সে দিন আমরা হাসিনাকে উৎখাত করতে পারব। খোদাতালা রহম করেছিলেন, হাসিনাকে আমরা উৎখাত করতে সক্ষম হয়েছি।
আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ গড়তে যাচ্ছি। যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময় আমাদের মনে অনেক দ্বিধা, ভয় আমাদের নিজেদের মধ্যে অনেক অনৈক্য।’
তিনি আরো বলেন, ‘অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করে, বাংলাদেশ কি ঠিক রাস্তায় যাচ্ছে? এ রকম তো হওয়ার কথা ছিল না। আমি সবাইকে আশ্বস্ত করি যে, বিপ্লবের পরে এ ধরনের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক এবং এভাবেই বিপ্লবের পরে নতুন দেশ, নতুন সমাজ, নতুন রাষ্ট্র নির্মিত হয়।’
জনপ্রিয় এ অ্যাক্টিভিস্ট বলেন, ‘দেশ কোনো প্রাণী নয়, কোনো সব প্রাণসত্তা না। দেশ মানুষকে দিয়ে তৈরি। এটা কম্পিউটারের মতো কম্পিউটারকে যেমন প্রগ্রাম করতে হয়, কাউকে চালাতে হয় কাউকে কী-বোর্ডে কিছু লিখতে হয়। দেশটাও ঠিক সে রকম। এই দেশে আমরা সবাই মিলে যেভাবে প্রগ্রাম করব, দেশ সেভাবেই চলবে।
দেশকে আমরা যেদিকে চালিয়ে নিতে চাই দেশ সেদিকে যাবে। আমরা কোন দিকে চালাতে চাই এ ব্যাপারে সবার মনে হয়তো নানা ধরনের স্বপ্ন আছে। কয়েকটা ব্যাপারে আমি (পিনাকী ভট্টাচার্য), ইলিয়াস, কনক সারোয়ার—এই তিনজন একসঙ্গে একটা কথা বলি। আমাদের এই যে ঐক্য, এই ঐক্যের বেসিসটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করব আমরা তিনজন যেভাবে ঐক্যটা করেছি, সেভাবে বাংলাদেশে একটা রাজনৈতিক ঐক্য সম্ভব কিনা সেটা আপনারা ভেবে দেখেন। আমরা একটা জিনিসে একমত—বাংলাদেশে আমরা কখনো আওয়ামী বাকশালীদের রাজনীতি করতে দেব না, বাংলাদেশে আমরা কখনো ভারতীয় আগ্রাসনকে জায়গা দেব না, বাংলাদেশকে আমরা একটা ইনসাফ, সাম্যের রাষ্ট্র হিসাবে পরিণত করব। এই তিনটা সিম্পল জিনিসে আমি, কনক ও ইলিয়াস একসঙ্গে অ্যাক্টিভিজম করছি। আমাদের যত সিদ্ধান্ত, যত কাজ, যত অ্যাক্টিভিজম—এই তিনটা জিনিস সাপোর্ট করে কিনা সেটা আমরা দেখি। তারপরে আমরা সেই কাজটা করি। আমরা সবাই মিলে এক প্রাণ হয়ে লড়াই করেছি, সেই ঐক্যটা আবার সম্ভব কিনা আমি জানি না। তবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে। খুব ন্যূনতম কিছুর ভিত্তিতে আমরা আমাদের সেই মহান ঐক্যটাকে যেন আবার কামিয়াব করতে পারি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামসহ সব কয়টা রাজনৈতিক দল এখানে আছেন, সবাইকেই আমি একটা জিনিস স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী আন্দোলন, হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি জিহাদী ভূমিকা যারা পালন করেছিল, রাজপথে যারা সবচেয়ে বেশি সাহস নিয়ে দাঁড়িয়েছিল, বাংলাদেশে যারা সবচেয়ে বেশি নির্যাতন নিয়ে দাঁড়িয়েছিল, তারা কিন্তু কোনো রাজনৈতিক শক্তি না, তারা খুব সাধারণ। এরা কখনো স্টেক দাবি করেননি।’
টিএ/