কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভা কর্তৃক ইজারাকৃত সড়কে চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে পৌরসভার কাজীপাড়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের দুজন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন- কুমারখালী পৌরসভা জিয়া মঞ্চের আহ্বায়ক ও ইজারাদার রাকিব হোসেন (৪০)। তিনি কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অপরজন সাইফুল ইসলাম শোভন (৩০)।
তিনি পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড যুব জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী আফজাল হোসাইনের ছেলে। বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক বছরের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যানবাহন চলাচল ও পার্কিংয়ের জন্য প্রায় ২১ লাখ ৬৪ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন রাকিব হোসেন।
বুধবার বিকেলে যুব জামায়াত নেতা শোভনের এক অটোচালক বন্ধু কাজীপাড়া এলাকায় আসলে রাকিবের সহকর্মীরা রশিদের মাধ্যমে ২০ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় অটোচালক টাকা না দিয়ে শোভনকে ফোন দেন। শোভন তার লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে এলে ইজারাদার রাকিবের সমর্থকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
আহত রাকিবের সহকর্মী বাপ্পী বলেন, ‘প্রথমে জামায়াত নেতা আফজাল হোসাইনের ছেলে শোভন এসে রাকিবের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এরপর শোভন ফোন করে লোকজন ডেকে আনেন। ওরা এসে রাকিবকে কুপিয়ে চলে যায়।’
অভিযোগ অস্বীকার করে যুব জামায়াত নেতা শোভন বলেন, ‘আমার বন্ধুর কাছ থেকে চাঁদা না নিতে বলায় রাকিবের লোকজন আমাদের মারধর করেছে। আমার হাত কেটে গেছে।
এ বিষয়ে শোভনের ভাই এনামুল বলেন, ‘শোভনের ওপর হামলাটা পরিকল্পিতভাবে হয়েছে। হামলাকারীরা জনমনে ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে গণ-প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’
উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান সবুজ বলেন, ‘রাকিব বিএনপির লোক এবং পৌর জিয়া মঞ্চের আহ্বায়ক। রাকিবের মাথায় একাধিক কোপের চিহ্ন রয়েছে। তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বিস্তারিত পরে বলা যাবে।’
উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন বলেন, ‘আমার ছেলে মারামারি করা লোক নয়। কী ঘটেছিল তা বিস্তারিত জেনে পরে জানাব।’
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ বলেন, ‘ইজারার টাকা তোলা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’ তবে পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে কাজীপাড়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আরআর