বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে ছিলেন না শেখ মেহেদী। ডানহাতি অফ স্পিনারের জায়গায় ক্যান্ডি ও ডাম্বুলায় খেলেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে সিরিজের শেষ ম্যাচে এসে মেহেদীকে একাদশে ফেরায়। নিজের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে ১১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে জিতিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা। সিরিজ জিতে লিটন দাস জানালেন, কলম্বোর উইকেট বিবেচনায় তারা আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে খেলবেন মেহেদী।
পাওয়ার প্লে কিংবা মাঝের ওভার—সবখানেই মেহেদী আঁটসাঁট বোলিংয়ে পারদর্শী। তবে সংযুক্ত আরব ও পাকিস্তান সফরে প্রত্যাশা মেটাতে না পারায় প্রশ্ন উঠছিল তাকে নিয়ে। সেই জেরেই হয়ত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে মেহেদীর চেয়ে মিরাজকে এগিয়ে রেখেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। মিরাজও অবশ্য প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। ফলে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে সুযোগ মেলে মেহেদীর।
ফেরার ম্যাচে যেমন পারফর্ম করা প্রয়োজন ছিল ডানহাতি অফ স্পিনার তাঁর চেয়েও বেশি করেছেন। দ্বিতীয় ওভারে মেহেদী প্রথমবার বোলিংয়ে এসেই কুশল পেরেরাকে নিজের শিকার বানিয়েছেন স্লিপে। পাওয়ার প্লে শেষের আগে দীনেশ চান্দিমালের উইকেটও নিয়েছেন তিনি। অষ্টম ওভারে বল হাতে নিয়ে মেহেদী ফিরিয়েছেন চারিথ আসালাঙ্কাকে। ডানহাতি অফ স্পিনারের টার্ন করে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি বুঝতেই পারেননি লঙ্কান অধিনায়ক।
নিজের শেষের ওভারেও উইকেট তুলে নিতে ভুল করেননি মেহেদী। শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রেখে স্বাগতিকদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা। নিজের চতুর্থ ওভারে এসে ৪৬ রান করা ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তিনি। ৪ ওভারে এক মেইডেনে ১১ খরচায় মেহেদীর শিকার ৪ উইকেটে। টি-টোয়েন্টিতে ডানহাতি অফ স্পিনারের এটাই সেরা বোলিং ফিগার। প্রথম দুই ম্যাচে না খেলালেও শেষ টি-টোয়েন্টিতে খেলানোর কারণ জানিয়েছেন লিটন।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বলেন, ‘শেখ মেহেদীকে খেলানোর পেছনে যে কারণ ছিল... আমরা বিশ্বাস করি মেহেদীর যে স্কিল তাতে কলম্বোর উইকেট তার জন্য উপযুক্ত। তার মানে এই নয় মেহেদী ভালো উইকেটে কিংবা অন্য উইকেটে ভালো বোলিং করতে পারবে না। যখন আমরা জানি আমাদের শেষের ম্যাচটা এখানে তখন থেকেই পরিকল্পনা ছিল এই মাঠে কেউ খেলুক আর না খেলুক শেখ মেহেদী খেলবে।’
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ২৯ রান করা মিরাজ বোলিংয়ে ২৪ রানে নিয়েছিলেন এক উইকেট। পরের ম্যাচে ২৬ রানে এক উইকেট নেয়া ডানহাতি অফ স্পিনার ব্যাটিংয়ে করেছিলেন মাত্র এক রান। অথচ মিরাজের জায়গায় সুযোগ পেয়ে ১১ রানে ৪ উইকেট নিলেন মেহেদী। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে তবে কী মিরাজ আর টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ পাবেন না? লিটন অবশ্য বলছেন ব্যাটিং সহায়ক উইকেট হলেও ফেরানো হবে মিরাজকে। তবে যদিও উইকেটে বোলারদের জন্য সুবিধা থাকে তাহলে সব ম্যাচ খেলবেন মেহেদী।
এ প্রসঙ্গে লিটন বলেন, ‘এটার মানে এও না যে মিরাজ খুব একটা ভালো বোলার না বা ভালো ব্যাটার না। কন্ডিশন যতই ভালো হোক, শেখ মেহেদী যতই ভালো পারফর্ম করুক, অধিনায়ক হিসেবে যখন দল বানাবো তখন আমি চেষ্টা করব উইকেট নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে। যদি আমি মনে করি উইকেট বোলিং ফ্রেন্ডলি হবে তাহলে অবশ্যই সব ম্যাচে শেখ মেহেদীকে খেলাব। যেদিন বুঝব উইকেট ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি সেদিন আবার মিরাজ ব্যাক করবে।’
আরআর