২০২৫ সাল শুরু হওয়ার পর থেকেই বিশ্ববাজারে একের পর এক রেকর্ড গড়ছে স্বর্ণের দাম। কখনো যুদ্ধ, কখনো সুদের হার, আবার কখনো মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা, সবকিছু মিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ২৬ শতাংশ। দুবাইয়ের স্বর্ণ বাজারে সরাসরি প্রভাব পড়েছে, যেখানে প্রতি গ্রাম ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ৪০০ দিরহামের গণ্ডি ছাড়িয়ে গেছে।
স্বর্ণের এই উত্থান ক্রেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেললেও বিনিয়োগকারীদের মনে তৈরি করছে লাভের আশার আলো। খবর গালফ নিউজের।
বিশ্ব অর্থনীতি যখন দোদুল্যমান, তখন বিনিয়োগকারীরা ছুটেছেন নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে- আর সেখানেই সবচেয়ে বড় ভরসা হয়ে উঠেছে স্বর্ণ।
দুবাইয়ে বর্তমানে প্রতি গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ৩৭৪ দিরহাম এবং ২৪ ক্যারেট ৪০৩.৫০ দিরহাম। মার্চ-এপ্রিলে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ৩৬৭ দিরহামের আশেপাশে থাকলেও এখন তা ধরে রেখেছে ঊর্ধ্বগতি।
বিশ্ব স্বর্ণ পরিষদ (ডব্লিউজিসি) তাদের মধ্য-বর্ষের প্রতিবেদনে বলছে, স্বর্ণের দাম দ্বিতীয়ার্ধে তিনটি সম্ভাব্য পথে যেতে পারে।
স্থিতিশীল (বেস কেস): দাম খুব একটা বাড়বে না, সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত উঠতে পারে।
বৃদ্ধি (বুল কেস): বৈশ্বিক অস্থিরতা বাড়লে স্বর্ণ আরও ১০-১৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
পতন (বিয়ার কেস): শান্তিপূর্ণ বিশ্ব পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কারণে দাম ১২-১৭ শতাংশ কমে যেতে পারে।
ক্রেতাদের করণীয়: এখনই কিনবেন, না কিছুদিন অপেক্ষা করবেন?
জুনে দাম শীর্ষে ওঠার পর কিছুটা স্থির হলেও এখনো তা ইতিহাসের দিক থেকে অনেক উঁচু।
যাদের তাড়াহুড়ো নেই, তারা আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে পারেন-বিশ্বে শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি হলে দাম নামতে পারে।
তবে আবার উত্তেজনা বাড়লে বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বর্ণ কেনা শুরু করলে দাম দ্রুতই বেড়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যদি ২২ ক্যারেট স্বর্ণ ৩৬৫ দিরহামের নিচে নামে, তাহলে সেটি হতে পারে ‘স্মার্ট বায়’।
বিনিয়োগকারীদের কৌশল: থাকবেন, না বেরিয়ে আসবেন?
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ বছরের শেষে সুদের হার কমাতে পারে, যা স্বর্ণের জন্য ইতিবাচক।
ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি এখনো বেশি, ফলে স্বর্ণেয় ‘সেফ হেভেন’ চাহিদা থাকছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এখনো স্বর্ণ কিনছে, যদিও আগের মতো রেকর্ড পরিমাণে নয়।
তবে দাম বাড়লে ভোক্তাদের চাহিদা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকছে। রিসাইকেল হওয়া স্বর্ণও সরবরাহ বাড়াতে পারে।
আরআর