১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ট্যারিফ নীতির আওতায় বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর প্রযোজ্য হতে পারে প্রায় ৫০ শতাংশ কার্যকর শুল্কহার (ইটিআর)। এ শুল্কহার নির্ধারিত হয়েছে বর্তমানে কার্যকর ১৫ শতাংশ শুল্ক এবং নতুন করে আরোপিত আরও ৩৫ শতাংশ শুল্ক মিলিয়ে। এ হার যুক্তরাষ্ট্রের সব বাণিজ্য অংশীদার দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, যা বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের জন্য এক গুরুতর হুমকি। আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা ফিচ রেটিংস ১৮ জুলাই এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।
ফিচ রেটিংসের হালনাগাদ ‘ইউএস ইটিআর মনিটর’ নামের একটি ইন্টার্যাকটিভ টুল অনুযায়ী, বাংলাদেশ নতুন শুল্ক কাঠামোর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। কারণ তেল-গ্যাস, তামা (কপার), ওষুধসহ যেসব পণ্যের ওপর অন্যান্য দেশকে বিশেষ শুল্কছাড় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ এ সুবিধা পাবে না। ফলে অন্যান্য দেশ শুল্কের কিছুটা ছাড় পেলেও বাংলাদেশ পুরোপুরি উচ্চ শুল্কের আওতায় চলে আসবে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক, যা দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য।
এ অস্বাভাবিক শুল্ক বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এখন যুক্তরাষ্ট্রের শর্তাবলির পর্যালোচনায় ব্যস্ত।
তবে এসব শর্তের অনেকগুলো শুধু বাণিজ্য নয়, বরং কূটনৈতিক ও নীতিগত বিষয়েও যুক্ত, যা নিয়ে আলোচনা কঠিন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ সরকার এখন এমন একটি কৌশলগত জবাব খুঁজছে, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে এই নতুন শুল্ক আরোপ পুনর্বিবেচনায় বাধ্য করা যায়।
এ বিষয়ে গতকাল আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফিচের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতিতে বড় পরিবর্তন আসছে।
বাংলাদেশের বর্তমান ইটিআর ১৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হচ্ছে। চীনের ইটিআর ৪১.৪ শতাংশ অপরিবর্তিত রয়েছে। এ ছাড়াও কানাডা ৩৫ শতাংশ, মেক্সিকো ৩০ শতাংশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশ ভেদে ১২ থেকে ৩০ শতাংশ, ভিয়েতনাম নতুন দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে ২০ শতাংশ অপরিবর্তিত, ইন্দোনেশিয়া নতুন দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে ১৯ শতাংশ অপরিবর্তিত রয়েছে।
‘ইটিআর মনিটর’ হচ্ছে ফিচ রেটিংসের তৈরি একটি ইন্টার্যাকটিভ বিশ্লেষণ টুল, যা আমদানি পণ্যের ভিত্তিতে দেশভিত্তিক ও খাতভিত্তিক শুল্কহার নির্ণয় করে। এটি নিয়মিত আপডেট হয় এবং ভবিষ্যতের শুল্ক পরিবর্তনের সম্ভাব্যতা বিশ্লেষণ করে।
এমআর/টিকে