বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হওয়া বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের তথ্য চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। সংশ্লিষ্ট ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নাম-ঠিকানা জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট নম্বর ও মোবাইল নম্বরসহ আরো কিছু তথ্য পেতে নির্বাচন কমিশন সব বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছে। রবিবার ইসির উপসচিব মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
ইসির উপসচিব বলেন, ‘৩ জুলাই বিগত ৩ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসারদের বিস্তারিত তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে চেয়ে চিঠি দেয় পিবিআই।’
বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসির কাছে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ‘ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানার, মামলা নং-১১, জি আর নং-১৫৬/২০২৫খ্রি,ধারা ১২০বি/১০৯/১৭১বি/১৭১ডি/১৭১জি/১৭১এইচ/১৭১আই/১২৪৩/৪০৬/৪২০ পেনাল কোড এর সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ঢাকা মেট্রো (উত্তর), ঢাকা ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের নাম, ঠিকানা, পিতার নাম, মাতার নাম, স্থায়ী/বর্তমান ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট নম্বর ও মোবাইল নম্বর ভোটকেন্দ্র ভিত্তিক সরবরাহের জন্য অনুরোধ করা হয়।’
এক্ষেত্রে এসব তথ্য জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে এ চিঠিতে।
উল্লেখ্য, দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ইসি তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে উল্টো ‘ভয়-ভীতি দেখিয়ে’ জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে গত ২২ জুন মামলা করেছে বিএনপি। রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা এ মামলার আসামির তালিকায় দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করা তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৯ জনের নাম রয়েছে।
মামলার পর সাবেক দুই সিইসি নূরুল হুদা এবং কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওই মামলার পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তথ্য চাইলে ইসি সচিবালয় এ উদ্যোগ নিল।
জাতীয় নির্বাচনে দেশের ৬৪ জেলার ডিসি এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পান এবং ইউএনওরা পান সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব।
জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাও ভোটের দায়িত্বে থাকেন।
প্রায় ২ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকেন প্রিজাইডিং সহকারী প্রিজারডিং ও পোলিং অফিসার হিসেবে।