প্রায় সাত সপ্তাহ পর অনুষ্ঠিত হলো রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনা। গত বুধবার (২৩ জুলাই) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে এদিন দুই পক্ষের মধ্যে সহস্রাধিক বন্দি বিনিময় হয়েছে।
বন্দি বিনিময় নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া থেকে একদল যুদ্ধবন্দি এরই মধ্যে দেশে ফিরিয়ে এসেছে। তিনি আরও বলেন, তুরস্কে মস্কোর সাথে আলোচনার ফলে ১ হাজারেরও বেশি বন্দি সেনা এখন মুক্ত। তবে ইউক্রেনীয় বন্দিদের বিনিময়ে কতজন রুশ সেনাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে তা জানা যায়নি।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৪০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত বৈঠকে রাশিয়া ও ইউক্রেন আরও বন্দি বিনিময় নিয়ে আলোচনা করেছে।
তবে যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী এবং দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের সম্ভাব্য বৈঠকের বিষয়ে পক্ষগুলো এখনও একমত হতে পারেনি।
আলোচনার পর ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের প্রধান রুস্তেম উমেরভ বলেন, ‘বৈঠকে মানবিক ব্যাপারগুলোতে আমাদের অগ্রগতি হয়েছে, তবে শত্রুতা বন্ধের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।’ উমেরভ জানান, ইউক্রেন আগস্টে মাসে জেলেনস্কি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে।
তবে রাশিয়া বলছে, শীর্ষ দুই নেতার বৈঠক চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য হবে, আলোচনার জন্য নয়। মস্কোর প্রতিনিধি দলের প্রধান ভ্লাদিমির মেডিনস্কি বলেন, এখনই দুই নেতার বৈঠক হওয়ার সময় আসেনি। তিনি জানান, রাশিয়া ইউক্রেনের সাথে আলোচনায় আরও যুদ্ধবন্দি বিনিময়ে সম্মত হয়েছে, যার মধ্যে ৩ হাজারেরও বেশি মৃত সেনার মৃতদেহও রয়েছে।
এদিকে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হলেও লড়াই অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধের ময়দানে দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহত রেখেছে। গত বুধবার খেরসনে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় কয়েকজন রুশ সেনা হতাহত হয়েছেন। বিপরীতে রাশিয়ার পাল্টা গ্লাইড বোমায় ক্রমাতর্স্ক ও সুমি অঞ্চলে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে। দুই পক্ষই দাবি করেছে, শত্রু সেনাদের লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে বিতর্কিত এক বিল পাস করে বিপাকে পড়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। জাতীয় দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাগুলোর ক্ষমতা সীমিত করে নতুন আইন পাসের প্রতিবাদে রাজধানী কিয়েভের পাশাপাশি লভিভ, ওডেসা ও জাপোরিঝিয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
হাজার হাজার মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তারা জেলেনস্কি সরকারের নতুন আইন বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন। তীব্র বিক্ষোভের মুখে নতি স্বীকারে বাধ্য হয়েছেন জেলেনস্কি।
বুধবার (২৩ জুলাই) জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি আইনের শাসন নিশ্চিত করতে এবং দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলোর স্বাধীনতা বজায় রাখতে একটি নতুন বিল পেশ করবেন।
এমআর/এসএন