ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কালিবাফ সম্প্রতি ইসরায়েল-আরোপিত যুদ্ধে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্পসের (IRGC) এয়ারোস্পেস ফোর্সের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।
তিনি বলেন, “আপনারা যেখানেই চেয়েছেন, সেখানেই আঘাত করেছেন এবং দখলদার (ফিলিস্তিনি) ভূখণ্ডের স্থল ও আকাশকে তাদের (ইসরায়েলি বাহিনী) জন্য নিরাপদহীন করে তুলেছেন।”
তেহরানে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) শহীদ কমান্ডারদের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের আগুন দেখে সেখানকার শিশুরা হাসি দিয়েছে তৃপ্তির সাথে। এভাবেই আপনারা নির্যাতিতদের পক্ষ নিয়ে প্রতিরোধ করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা ছিলেন এমন তরবারিধারী যোদ্ধা যারা শত্রুর দুঃখ-দুর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এই যুদ্ধে আমরা দেখেছি, কীভাবে আপনারা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণস্থলের পাশে দাঁড়িয়ে জাতির জন্য লড়েছেন।
আমাদের যোদ্ধারা জীবন বিসর্জন দিয়ে ইসরায়েলের F-35 যুদ্ধবিমানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছেন এবং এই বর্বর শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিয়েছেন।”
পার্লামেন্ট স্পিকার আইআরজিসি এয়ারোস্পেস ফোর্সকে ইরানি পৌরাণিক নায়ক ‘আরাশ দ্য আর্চার’-এর সাথে তুলনা করেন। তিনি বলেন, “আরাশ ছিল ইরানের আত্মার রক্ষক, আর আজকের ইতিহাসের এই মোড়ে আমাদের আইআরজিসি’র ‘আরাশ’-রা বিশ্বাস ও জীবনের ধনুক থেকে দূরপাল্লার তীর ছুঁড়ে শত্রুর দিকে নিক্ষেপ করেছে, দেশ পেরিয়ে গেছে, পুরো ইসলামি উম্মাহর গৌরব হয়েছে এবং দখলকৃত ভূখণ্ডে আঘাত করে শত্রুর ঘুম কেড়ে নিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ইসলামি প্রজাতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়িত্ব ও শক্তির মূল রহস্য হচ্ছে জনগণের সক্রিয় উপস্থিতি। আমরা দেখেছি, কীভাবে আল্লাহ এই হৃদয়গুলোকে রূপান্তরিত করে দৃশ্যপট সৃষ্টি করেছেন। যদিও আমরা আমাদের কিছু নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ও কমান্ডার হারিয়েছি, তবে এই জাতি আমাদের গর্বিত করেছে।”
কালিবাফ বলেন, “শত্রুদের ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও ইরানি জাতি এখন আরও ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী হয়েছে। আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও ইসরায়েল একটি শক্তিশালী ইরানের কারণে ক্ষুব্ধ এবং তারা ইসলামি প্রজাতন্ত্রের উপর রাগান্বিত, কারণ এটি জনগণের হৃদয় ও চিন্তা থেকে উঠে এসেছে।”
প্রসঙ্গত, ১৩ জুন ইসরায়েল বিনা উসকানিতে ইরানের ওপর একটি আগ্রাসী যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। তারা ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক এলাকায় বিমান হামলা চালায়, যেখানে এক হাজারেরও বেশি মানুষ শহীদ হন, যাদের মধ্যে ছিলেন শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক।
জবাবে ইরানের সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিক প্রতিআক্রমণ শুরু করে। ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্পসের এয়ারোস্পেস ফোর্স “অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩” এর অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ২২ দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার ফলে দখলকৃত ভূখণ্ডের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এমকে/এসএন