ম্যানচেস্টার টেস্টে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়ের সমান ড্র করেছে ভারত। সিরিজের চতুর্থ টেস্ট ম্যাচ ড্র করে এমনিই হতাশ ইংল্যান্ড। তার মাঝে বিতর্কের শিকার হয়েছেন দলটির অধিনায়ক বেন স্টোকস। নানা রকম মন্তব্যের মাঝে তাকে সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করেছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার। যিনি স্টোকসকে ‘স্পয়েলড কিড’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
মূল ঘটনা ঘটে শেষ দিনে। পঞ্চম দিনের ১৫ ওভার বাকি থাকতে ভারতের দুই ব্যাটার রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দর সেঞ্চুরির কাছাকাছি ছিলেন। এ অবস্থায় হঠাৎ করেই খেলা থামানোর প্রস্তাব দেন স্টোকস, এগিয়ে এসে ভারতের খেলোয়াড়দের করমর্দনের মাধ্যমে ড্র মেনে নিতে বলেন। তবে ভারত সেই প্রস্তাবে সায় না দিলে রেগে যান তিনি।
এই ঘটনায় ‘খেলার চেতনা’ বা ‘স্পিরিট অব দ্য গেম’ প্রসঙ্গ আলোচনায় উঠে এসেছে। সঞ্জয় মাঞ্জরেকার খোলাখুলিভাবেই স্টোকসের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত যা দেখা গেছে তা হলো একটি দলের হতাশার বহিঃপ্রকাশ, যারা নিজেদের মাঠে সব সময় আধিপত্য দেখিয়ে এসেছে। বেন স্টোকস স্পয়েল্ড কিডের মতো আচরণ করেছেন। তিনি আসলেই ছোট বাচ্চার মতো আচরণ করেছেন।’
মাঞ্জরেকার আরো বলেন, ‘বাজবল যুগে এমন ড্র খুবই বিরল। আবহাওয়ার কোনো বাধা ছাড়াই যে ড্র হয়েছে, সেটি ভারতের বিপক্ষেই প্রথম। ভারতের ব্যাটাররা যখন সেঞ্চুরির এত কাছে, তখন খেলা বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়ে স্টোকস মূলত খেলার চেতনার বিপরীতে গিয়েছেন।’
ঘটনার সময় স্টাম্প মাইকে স্টোকস, জাদেজা এবং আরো কয়েকজন খেলোয়াড়ের কথোপকথন ধরা পড়ে। তখন ভারতের লিড ছিল একশ-র বেশি, হাতে ছিল ছয়টি উইকেট। জাদেজা ও সুন্দর দুজনেই সেট হয়ে শতকের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এই অবস্থায় খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তই ছিল স্বাভাবিক ও যৌক্তিক।
স্টোকসের এমন আচরণকে কেন্দ্র করে খেলার শেষে আরো একটি বিতর্কিত ঘটনা ঘটে। ইংল্যান্ডের তরুণ ক্রিকেটার হ্যারি ব্রুক ইচ্ছাকৃতভাবে আলসেমির মতো করে বল করেন যেন জাদেজা ও সুন্দর সহজে সেঞ্চুরি করতে পারেন, যা দেখে অনেকেই বিরক্ত হন এবং একে ‘বিদ্বেষ’ বলেও আখ্যা দেন।
মাঞ্জরেকার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘স্টোকস কি এমন করতেন, যদি তার দলের দুই ব্যাটার শতরানের দ্বারপ্রান্তে থাকতেন? আমার মনে হয় না তিনি তখন খেলা থামানোর প্রস্তাব দিতেন। জাদেজা ও সুন্দর দীর্ঘসময় ধরে ব্যাট করে সেঞ্চুরির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন। এ অবস্থায় তাদের সেই অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করতে চাওয়া স্পষ্টতই খেলার চেতনার পরিপন্থী।’
এমকে/টিকে