মাঝেমধ্যেই নীরব কান্না চেপে রেখে কাজ করে যান যারা, তাদের একজন অভিনেত্রী শিখা খান মৌ। ২৫ বছরের দীর্ঘ অভিনয় জীবনে কত চরিত্রে নিজেকে ভেঙেছেন, গড়েছেন। কিন্তু আজ তিনি নিজেই বলছেন—নিজেকে অভিনেত্রী ভাবতে লজ্জা হয়। কাজ কমে গেছে, কিন্তু তাঁর প্রতি অবহেলা যেন বেড়েছে বহুগুণ।
সম্প্রতি এক আবেগঘন ফেসবুক স্ট্যাটাসে শিখা খান মৌ লেখেন, ‘‘আগে যেখানে মাসে ১৫ থেকে ২০ দিন কাজ করতাম, এখন মাসে ৪ থেকে ৫ দিনও কাজ হচ্ছে না। অভিনয় করেই আমার সংসার চলে, তাহলে কিভাবে নিজেকে অভিনেত্রী ভাবি?’’ এই লেখাটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে নেটমাধ্যমে। তার অভিমানী কণ্ঠে ভেসে আসে আরও একটি গভীর হতাশা—‘‘বেঁচে থাকতে মূল্যায়ন না হলেও মরে গেলে হয়তো কেউ বলবে আহারে, মহিলাটা ভালো ছিল। কিন্তু তাতে কি লাভ হবে আমার?’’
এই খোলামেলা স্বীকারোক্তির পর নেটিজেনদের আগ্রহ বাড়ে, কেউ সহানুভূতি জানান, আবার কেউ-কেউ তার বক্তব্যকে বিকৃত করে ভিডিও তৈরি করে ছড়িয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ফের একটি স্ট্যাটাস দেন শিখা খান। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘আমি কখনোই বলিনি আমি বাসা ভাড়া দিতে পারছি না কিংবা সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। কিছু ইউটিউবার ও ব্লগার আমার পোস্টকে বিকৃত করে দুঃখী চেহারার ছবি দিয়ে ভিডিও বানাচ্ছে, যা অত্যন্ত কষ্টদায়ক।’’
শিখার বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল এই ইঙ্গিত দেওয়া—দীর্ঘদিনের শিল্পীরা যেন আগের মতো কাজের সুযোগ পান। কিন্তু কিছু কনটেন্ট নির্মাতা সেই আবেগকে পুঁজি করে তৈরি করছেন মনগড়া গল্প। এই বিষয়টি নিয়ে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘‘এইসব ফাইজলামির একটা সীমা থাকা উচিত।’’
অভিনয়ের প্রতি দায়বদ্ধ শিখা খান মৌ এখনো আশা করেন, অন্তত তাঁর সহকর্মীরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন। শিল্পীর ভাষায়, ‘‘যে কটা দিন বাঁচি, কাজ করে যেতে চাই। আল্লাহ সহায় আছেন, আপনারাও পাশে থাকবেন এই আশা করছি।’’
একজন শিল্পীর অভিমান, অবহেলা ও হাহাকারের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে শিখা খানের এই পোস্টগুলো। এ যেন কেবল একটি ব্যক্তির গল্প নয়, বরং সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসা অনেক শিল্পীর না বলা কষ্টের প্রতিধ্বনি।
এসএন