‘জুলাই সনদ’ এর খসড়াকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেখা দিয়েছে মতপার্থক্য। খসড়ার মূল অঙ্গীকার ও বাস্তবায়নকাল নিয়ে বিএনপি একমত হলেও শর্ত রেখেছে জামায়াত ও এনসিপি। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের সঙ্গে সংলাপে যার যার অবস্থান জানায় দলগুলো। কমিশন জানায়, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই খসড়াকে চূড়ান্ত করতে চায় তারা।
খসড়ার সঙ্গে প্রায় একমত বিএনপি, যদিও তারা খসড়ার কিছু শব্দচয়ন ও গঠন নিয়ে সংশোধনী দেবে বলে জানিয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, খসড়ায় উল্লেখিত অঙ্গীকার ও সেগুলোর নির্বাচনের পর দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের প্রস্তাবে তারা সম্মত। তবে তিনি সংবিধানের পরিবর্তে আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামো শক্তিশালী করার পক্ষেও মত দেন, যাতে প্রয়োজন অনুযায়ী সহজে সংশোধন আনা যায়। পাশাপাশি নারী প্রতিনিধিত্বে ধাপে ধাপে অগ্রসর হয়ে পরবর্তী নির্বাচনে সরাসরি ৩০ জন নারী এমপির লক্ষ্য স্থির করেছে বিএনপি।
অন্যদিকে, জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. তাহের খসড়াটিকে ‘অসম্পূর্ণ ও বিপজ্জনক’ বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, নির্বাচনের আগেই অধ্যাদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে খসড়ার আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে। দলটি নিজস্ব একটি খসড়া জমা দেবে বলেও জানান তিনি। একইসঙ্গে এনসিপির পক্ষ থেকে আখতার হোসেন বলেন, মৌলিক সংস্কার ছাড়া তারা সনদে স্বাক্ষর করবে না। তাদের দাবি, সনদের ভিত্তিতে নতুন সরকার যেন বিচ্যুত না হতে পারে, সে জন্য আইনি সুরক্ষা জরুরি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিয়োগপ্রক্রিয়া ও ‘র্যা ঙ্কড চয়েস’ পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য রয়ে গেছে এখনো। এ অবস্থায় কমিশনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটির নতুন প্রস্তাব দেয়া হলেও পদ্ধতিগত দিক নিয়ে আলোচনা ঝুলে আছে। তবে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন বহাল রাখা এবং ১০০ আসনে উন্নীত করার লক্ষ্যে দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি ঐক্যমত গড়ে উঠেছে।
আলোচনায় অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, সিপিবি, এবি পার্টিসহ ৩০টি দল। আলোচনার শেষদিকে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, ইতিমধ্যে ৬৫০টির বেশি প্রস্তাবে বিএনপির সম্মতি মিলেছে এবং ৩০ জুলাইয়ের মধ্যেই ঐকমত্যের বিষয়গুলোর তালিকা দলগুলোকে পাঠানো হবে।
এফপি/টিএ