দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে উল্লেখ করায় পশ্চিমবঙ্গজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। কলকাতার গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়সহ রাজ্যের শাসকদলের শীর্ষ নেতারা। এবার সেই প্রতিবাদে গলা মিলিয়েছেন টলিউড সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “বাংলা ভাষা ছিল, আছে, আর থাকবে। তার জন্য লড়াই করতে হলে আমরা সকলে লড়ব।”
সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বলায় বাঙালি শ্রমিকদের বাংলাদেশি বলে অপমান ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এমনকী, মারধরের ঘটনাও ঘটেছে বলে দাবি করেছেন নির্যাতিতরা। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের ফিরিয়ে এনেছে রাজ্যে। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ও রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম নির্যাতিত শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। একুশে জুলাইয়ের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
এই আবহে দিল্লি পুলিশের একটি চিঠি নতুন করে বিতর্কের জন্ম দেয়। চিঠিতে জানানো হয়, আটককৃতদের কাছ থেকে পাওয়া নথি বিশ্লেষণের জন্য একজন ট্রান্সলেটরের প্রয়োজন, যিনি “বাংলাদেশি ভাষা” পড়তে সক্ষম। এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তৃণমূল, অভিযোগ ওঠে—এটি বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের সরাসরি অপমান।
এর আগেও মাতৃভাষা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন প্রসেনজিৎ। মুম্বইয়ে ‘মালিক’ ছবির সাংবাদিক সম্মেলনে এক সাংবাদিক বাংলায় প্রশ্ন করলে তিনি হেসে বলেন, “আপনার বাংলায় কথা বলার দরকার কী?” সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। পরে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, “আমার কথার উদ্দেশ্য ভুলভাবে বোঝা হয়েছে। আমি কখনওই নিজের মাতৃভাষাকে অসম্মান করার কথা ভাবতে পারি না।”
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্য যেন বাংলা ভাষার প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতারই পুনরায় প্রমাণ।