কিংবদন্তী শিল্পী কিশোর কুমারের বহুমুখী প্রতিভার কথা সবারই জানা। একাধারে তিনি ছিলেন সফল গায়ক, অভিনেতা, সুরকার, এবং পরিচালক।তবে তার জীবনের একটি মজার ঘটনা অনেকেই হয়তো জানেন না। শুধুমাত্র আয়কর বাঁচানোর জন্য তিনি একটি সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা করেছিলেন, যা পরবর্তীতে তার জীবনের সবচেয়ে বড় হিটগুলোর মধ্যে একটি হয়ে ওঠে।
সময়টা ১৯৫৮ সাল। গায়ক হিসেবে কিশোর কুমারের তখন তুঙ্গে জনপ্রিয়তা। তার রোজগারও ছিল আকাশছোঁয়া। স্বাভাবিকভাবেই মোটা অঙ্কের আয়কর দিতে হচ্ছিল তাকে। এই বাড়তি করের বোঝা থেকে মুক্তি পেতে তিনি একটি অভিনব উপায় বের করলেন। তিনি ভাবলেন, এমন একটি ছবি বানাবেন যা হবে সুপার ফ্লপ। এরপর সেই ফ্লপের লোকসান দেখিয়ে আয়করে ছাড় পাবেন।
যেমন ভাবা, তেমন কাজ। নিজের এই 'ফ্লপ' মিশনের জন্য তিনি বেছে নিলেন ‘চলতি কা নাম গাড়ি’ ছবিটি। ছবির প্রধান চরিত্রে তিনি নিজে অভিনয় করেন এবং তার দুই ভাই অশোক কুমার ও অনুপ কুমারকেও যুক্ত করেন। নায়িকা হিসেবে ছিলেন তৎকালীন সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মধুবালা।
সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিশোর কুমার আশা করেছিলেন, কম বাজেটে তৈরি এই ছবিটি ফ্লপ হলে তার পরিকল্পনা সফল হবে।
কিন্তু তার সব হিসেব-নিকেশ উল্টে গেল। ছবিটি মুক্তির পর দর্শক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে। তার ফ্লপ বানানোর পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়ে ‘চলতি কা নাম গাড়ি’ বক্স অফিসে সুপারহিট হয়। জানা যায়, মাত্র ৩৫ লাখ টাকা বাজেটে তৈরি এই সিনেমাটি আয় করেছিল আড়াই কোটি টাকা। ছবিটি শুধু দেশেই নয়, বিশ্বজুড়েও প্রদর্শিত হয়।
এই বিশাল সাফল্যের ফলে কিশোর কুমারের আয়কর আরও বেড়ে যায়। নিজের বানানো 'সুপারহিট' ছবির জন্য তাকে আরও বেশি কর দিতে হলো।
শেষমেশ কোনো উপায় না পেয়ে তিনি ছবির স্বত্ব নিজের ব্যক্তিগত সহকারীকে দিয়ে দেন, যেন অন্তত কিছুটা করের বোঝা কমানো যায়।
এমআর