আমজনতার দলের সদস্যসচিব মো. তারেক রহমান বলেছেন, একজন আহত যোদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে ১১৮ জনের নামে মামলা দিয়েছে এনসিপি নেতা। যাকে মৃত দেখানো হয়েছে সে বলছে, আমি মরি নাই। তার পরিবার এ বিষয়ে লজ্জিত ও ক্ষমা প্রার্থী। তারা এই মামলা থেকে বাঁচতে চায়।
তিনি বলেন, ‘ইউনূস স্যারকে জবাব দিতে হবে তিনি যে এনসিপিকে অবাধ স্বাধীনতা দিয়েছেন, সীমাহীন ক্ষমতা দিয়েছেন সেই ক্ষমতা ব্যবহার করে জীবিত মানুষকে মৃত দেখিয়ে মামলা বাণিজ্য করছেন এনসিপি নেতারা। এর কোনো জবাব আছে ইউনূস স্যারের কাছে?’
শুক্রবার দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে এসব কথা বলেন তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমি যেটা মনে করি, ড. ইউনূস স্যারকে এর দায় নিতে হবে।তিনি যে এনসিপিকে বিশাল ক্ষমতা দিয়েছেন সমাজে লুটপাট করার, মামলা বাণিজ্য করার। এর জন্য উনাকে দায় নিতে হবে।’
আজ শুক্রবার দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি নিউজে বেরিয়ে আসে এনসিপির এক নেতার মামলা বাণিজ্যের তথ্য। এতে বলা হয়, রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গত বছরের ৫ আগস্ট গুলিতে আহত এক শিশুকে বানানো হয়েছে ‘শহীদ’।
এরপর হয়েছে হত্যা মামলা, চলেছে গ্রেপ্তার-জুলুম। শিশুটির নিরক্ষর বাবাকে ভুলিয়েভালিয়ে কৌশলে জীবিত ছেলেকে মৃত দেখিয়ে আদালতে হয়েছে ‘মৃত্যুর মামলা’। এখন সেই মামলার দায় আর মামলাবাজদের হুমকিতে আতঙ্কে দিন কাটছে পরিবারটির।
১১ বছরের শিশুটির নাম সোহাগ। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজের নিচে গুলিবিদ্ধ হয় সে।
আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে নেওয়া হয় গণস্বাস্থ্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরে কিছু মানুষ তাকে মৃত বানিয়ে কাগজে-কলমে চালিয়ে দেয় ‘শহীদ’ হিসেবে।
একটি সাজানো মামলায় শিশুটিকে দেখানো হয় নিহত। ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর করা মামলায় আসামি করা হয় ১১৮ জনকে। চার মাস ছয় দিন পর জানা যায়, সোহাগ আসলে জীবিত। আদালতে হাজির হয়ে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। তার বাবা জহিরুল ইসলাম রাজুও জানান, হত্যা মামলা ছিল পুরোপুরি সাজানো। এতে তিনি দায়ী করেন কেরানীগঞ্জের জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা মো. শাহজাহান সম্রাটকে।
দেশের একটি গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, জীবিত শিশু সোহাগকে মৃত দেখিয়ে ওই মামলা থেকে মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ ও জমি পাওয়ার স্বপ্ন দেখানো হয় পরিবারটিকে।
সম্রাট জানান, সরকার আহত জুলাইযোদ্ধাদের ৩০ লাখ টাকা ও চার কাঠা জমি দেবে। সেই লোভে পড়ে রাজু মামলায় রাজি হন। বলেন, ‘আমারে সম্রাট বলে আহত মামলা করবে, করছে নিহত মামলা। সেদিন ছেলে সাথেই ছিল। তাকে গাড়িতে রেখে আমাকে ওপরে নিয়ে যায়। উকিল সব বলে। আমি শুধু দাঁড়িয়ে ছিলাম।’ এই ফাঁদে পড়ার পর পুরো পরিবার আতঙ্কে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে সাহস করে আদালতে গিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়, শিশুটি জীবিত।
কেএন/টিকে