বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খান ও তার পরিবার তাদের ১৫ হাজার কোটি রুপির নবাব সম্পত্তি নিয়ে আইনি লড়াই চলছে। এর আগে নিম্ন আদালতের রায়ে সাইফ আলী খান, তার দুই বোন সোহা আলী খান ও সাবা সুলতান এবং তাদের মা শর্মিলা ঠাকুরকে নবাব হামিদুল্লাহ খানের বৈধ উত্তরাধিকারী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। গত জুলাই মাসে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে নিম্ন আদালতের সেই আদেশ বাতিল করে।
এবার সুপ্রিম কোর্ট মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছে।
৮ আগস্ট সেই রায় ফিরিয়ে দিয়ে মামলাটি নতুন করে শুনানির জন্য নিম্ন আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। যা পতৌদি পরিবারের জন্য জন্য বেশ স্বস্তির খবর।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিচারপতি পি.এস. নারসিমহা ও অতুল চন্দুরকর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ওমর ফারুক আলি ও রাশিদ আলির করা এক আবেদন শুনানি করে। তারা নবাব হামিদুল্লাহ খানের বড় ভাইয়ের বংশধর।
এই আবেদনেই হাইকোর্টের ৩০ জুনের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ জারি করে।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৪ সালে। সেই বছর মধ্যপ্রদেশ সরকার ঘোষণা করে, ভোপালের শেষ নবাব হামিদুল্লাহ খানের সম্পত্তি ‘এনেমি প্রোপারটি অ্যাক্ট ১৯৬৮’-এর আওতায় শত্রু সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে। অর্থাৎ এই সম্পত্তিকে বিদেশি সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করে তা সরকারের অধীনে আনা হবে।
কারণ, নবাব হামিদুল্লাহ খানের কন্যা আবিদা সুলতান ১৯৫০ সালে পাকাপাকিভাবে পাকিস্তানে বসবাস শুরু করেন। সেই সূত্রেই এই সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে আবেদন করেন সাইফ আলী খান। দীর্ঘ দিন স্থগিতাদেশ জারি থাকলেও, ২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর আদালত সেই স্থগিতাদেশ তুলে নেয়। অবশেষে এ বছর জুলাই মাসে সাইফের আবেদনও খারিজ করে দেন বিচারপতিরা।
এর ফলে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার বিশাল সম্পত্তি ভারত সরকারের হেফাজতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তবে ৮ আগস্টের রায়ে ফের স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে পতৌদি পরিবার।
ভোপালের কোহেফিজা থেকে চিকলোড় পর্যন্ত বিস্তৃত সাইফের সম্পত্তি। যেটির আনুমানিক বাজার দর ১৫ হাজার কোটি টাকা। ভোপালের শেষ নবাব ছিলেন হামিদুল্লাহ খান। সাইফ তারই প্রপৌত্র। হামিদুল্লাহর কন্যা আবিদা সুলতান ১৯৫০ সাল থেকে পাকাপাকিভাবে পাকিস্তানে বসবাস শুরু করেন। এর পর থেকে পতৌদিদেরই ছিল ভোপালের ওই সম্পত্তি। কিন্তু ১৯৬৮ সালে পাস হয় ‘শত্রু সম্পত্তি আইন’ অনুযায়ী, ১৯৪৭-এ দেশ ভাগের পর অনেক মানুষই পাকিস্তান ও চীনে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের জমি, বাড়ি এবং শেয়ারের মতো সম্পত্তি এখনো এ দেশে রয়ে গিয়েছে। সেই সম্পত্তিগুলোকেই ‘শত্রুর সম্পত্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অর্থাৎ, স্থায়ী ভাবে পাকিস্তান ও চীনে চলে যাওয়া ভারতীয়দের সম্পত্তিতে তাদের বংশধরদের আর কোনো অধিকার থাকবে না। সরকার সেই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে বিক্রিও করতে পারবে।
এফপি/ টিএ