নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিতে সরকারের উদ্যোগ-আয়োজন যথেষ্ট নয়, সে কারণে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ।
সোমবার (১১ আগস্ট) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তৃতীয় ও শেষ ধাপের প্রার্থী বাছাই আয়োজনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, পরিস্থিতির আদতে কোনো উন্নতি হয় নাই। বরং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও খারাপ হয়েছে। বিগত এক বছরের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের তথ্য তাই বলে।
মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতার প্রধান ক্ষেত্র হলো নির্বাচন। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘাত, হানাহানি ও সহিংসতা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। শতশত মানুষ এই রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণ হারায়। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে আমরা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি, নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন প্রত্যাশা করেছিলাম। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি আশা করেছিলাম।
তিনশ আসনের সাক্ষাৎকার সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, কুমিল্লা, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে তৃণমূলের দায়িত্বশীলদের থেকে যেসব সম্ভব্য প্রার্থীর নাম এসেছে তাদের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে মিলিত হন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতারা। আসনের সম্ভাবনা, সংকট ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে একজনকে নির্ধারণ করা হয়। ইতোমধ্যেই আরও দুই দফা সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটা তৃতীয় দফায় সাক্ষাৎকার। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দ্রুতই আনুষ্ঠানিকভাবে তিনশ আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে।
একইসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পিআর পদ্ধতিতে উভয়কক্ষে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থাকে সুস্থির ও সাবলীল করতে উভয়কক্ষে আমরাসহ দেশের অনেক রাজনৈতিক সংগঠন ও বুদ্ধিজীবী দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার নিম্নকক্ষে পিআর নিয়ে আলোচনার এজেন্ডাই রাখেনি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা ভয়ংকর হতে পারে তার সাম্প্রতিক নজির দেখা গেছে গাজীপুরে। প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও জবাই করে সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে।
নির্বাচনের সময় সাংবাদিকরা যে অন্যায়, ভোটচুরি ও ভোট ডাকাতির তথ্য তুলে ধরবে তার সাহস কোথা থেকে পাবেন সাংবাদিকরা? আমরা মনে করছি, আসন্ন নির্বাচনে সাংবাদিক বা অন্য কারো ভোট সংক্রান্ত অন্যায়ের তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে ভয় তৈরি করতে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড হয়েছে। তাই যদি হয় তাহলে এবারের নির্বাচনও আগের মতোই কলঙ্কিত হবে। সামগ্রিকভাবে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিতে সরকারের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাকে যথেষ্ট মনে হচ্ছে না, ফলত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডও তৈরি হচ্ছে না।
এসএন