দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আগামী ২০ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) উদ্বোধন হতে যাচ্ছে গাইবান্ধা-কুড়িগ্রামবাসীর স্বপ্নের তিস্তা সেতু। সোমবার (১১ আগস্ট) স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ শামীম বেপারী স্বাক্ষরিত পত্রে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে প্রথমে গত ২ আগস্ট ও পরে তারিখ পিছিয়ে ২৫ আগস্ট সেতুটি উদ্বোধনের সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল।
গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী মন্ত্রণালয়ের চিঠি প্রাপ্তির কথা জানিয়ে আগামী ২০ আগস্ট উদ্বোধনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য তিস্তা নদীর ওপর এই সেতু নির্মিত হয়েছে। যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য আগামী ২০ আগস্ট খুলে দেয়া হবে এ তিস্তা সেতু।
প্রায় এক হাজার ৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর এলজিইডি’র নির্মিত অন্যতম বৃহৎ সেতু। এটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ও কুড়িগ্রামের চিলমারীর মধ্যে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দুই জেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ সৃষ্টি করবে।
সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিসি গার্ডার এ সেতুটি নির্মাণ করেছে।
সেতুটিতে বসানো হয়েছে ৩১টি স্প্যান। রঙ, লাইটিংসহ পুরো সেতুর অবকাঠামো এখন নয়নাভিরাম। সম্ভাবনার স্বপ্নের সেতুর বাস্তব দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন তিস্তা পাড়ে ভিড় করছে মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, সেতুটির কারণে দুপাশে স্থায়ী ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়ায় বন্ধ হয়েছে ওই এলাকার নদীভাঙন। কুড়িগ্রাম, উলিপুর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, চিলমারীর সঙ্গে সড়ক পথে ঢাকায় যাওয়ার সময় কমে আসবে প্রায় ৪ ঘণ্টার। সড়ক যোগাযোগ সৃষ্টিসহ দূরত্ব কমবে গাইবান্ধার সঙ্গে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাটসহ তিস্তা ওপারের জেলাগুলোর। পাল্টে যাবে দু’পাড়ের মানুষের জীবনমানের ধারা, ঘটবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
সেতুর পাশাপাশি এর উভয়পাশে স্থায়ীভাবে নদী শাসন করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার। সেতুর উভয় পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে ৮৬ কিলোমিটার। দীর্ঘ প্রত্যাশিত এ সেতুটি এখন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার শেষ পর্যায়ের কাজ চলমান আছে।
২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি সেতুটির কাজের ফলক উন্মোচন করা হয়। কিন্তু এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। নির্মাণ ব্যয় হয় ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
এফপি/ টিএ