ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভাইস-প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে প্রার্থী হয়েছিলেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জুলিয়াস সিজার তালুকদার। তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় এবং শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে ভোটার তালিকা ও প্রার্থিতা থেকে তাকে বাদ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে সিজারের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনের কাছে চিঠি দিয়েছেন সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার জাওয়াদ ইবনে ফরিদ। চিঠির অনুলিপি ঢাবির প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদের কাছেও দেওয়া হয়েছে।
চিফ রিটার্নিং অফিসার ও প্রক্টরের কাছে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আপনার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, মো. জুলিয়াস সিজার তালুকদার, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগ, শিক্ষাবর্ষ-২০১৪-২০১৫, রেজিঃ নম্বর ২০১৪-৯১৫-৮৫৫। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন শিক্ষার্থী নির্যাতনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় ডাকসু ভোটার তালিকা থেকে উক্ত শিক্ষার্থীর নাম বাদ দেওয়ার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।’
চিঠির বিষয়ে চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, তিনি হল সংসদ নির্বাচনের রিটার্ন কর্মকর্তার থেকে চিঠি পেয়েছেন। সিজারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রমাণ হলে নির্বাচন কমিশনাররা মিটিংয়ের মাধ্যমে তার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেবেন।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে ডাকসুর ভিপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম জমা দেন সিজার, যা ছিল ওই পদে জমা দেওয়া প্রথম মনোনয়ন।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরই শিক্ষার্থীরা বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তারা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে গিয়ে ‘ছাত্রলীগ ও সন্ত্রাসমুক্ত’ ভোটার তালিকা প্রকাশের দাবি জানান।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘ডিম সিজারের মনোনয়ন, বাতিল করো করতে হবে’; ‘সন্ত্রাসী লীগারের মনোনয়ন, বাতিল করো করতে হবে’, ‘সফট লীগারের মনোনয়ন, বাতিল করো করতে হবে’; ‘ছি ছি, ভিসি সন্ত্রাসী সিজারের মনোনয়ন, মানি না মানবো না’; ‘গুপ্ত লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘সফট লীগার মনোনয়ন নেয়, প্রশাসন কী করে?’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীরা আগামীকাল দুপুর ১২টার মধ্যে সিজারের ভোটার ও প্রার্থিতা বাতিলের আল্টিমেটাম দেন। তা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
শেষ পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সময়ের শুরুতেই নির্বাচন কমিশন জুলিয়াস সিজারের ভোটার তালিকা ও প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে।
এসএন