কুমিল্লায় শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে কলিজা খুলে ফেলার হুমকি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে গায়ের জোরে দলীয় সম্মেলন করার অভিযোগে কুমিল্লার দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য ও নাঙ্গলকোটের সাবেক এমপি আব্দুল গফুর ভূঁইয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএনপি।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়। এতে আগামী তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশের অনুলিপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ককে পাঠানো হয়েছে।
গফুর ভূঁইয়া ২০০১ সালে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হন।
নোটিশে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও জেলা প্রশাসক কুমিল্লাকে নিয়ে আপনার একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাছাড়া গত ১১ ও ১২ আগস্ট নাঙ্গলকোট উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নাঙ্গলকোট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত বিষয়ে আপনাকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে নিম্নস্বাক্ষরকারী নিকট জবাব প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, নাঙ্গলকোট উপজেলার ভোলাইন বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি হিসেবে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন থেকে সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভূঁইয়া, বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদারের বড় ভাই মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীন এবং ইসরাত সুলতানা সুমীর নাম প্রস্তাব করা হয়। পরে বোর্ড থেকে তাদের তিন জনের মধ্যে মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীনকে সভাপতি করা হলে বিপত্তি দেখা দেয়।
কমিটির সভাপতির নামের স্থানে নিজের নাম না থাকায় ক্ষিপ্ত হয়ে ফোনে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে গালাগাল ও নানা হুমকি দেন গফুর ভূঁইয়া। এ সময় গফুর ভূঁইয়াকে বলতে শোনা গেছে, ‘আপনাকে এ চেয়ারে কে বসাইছে, তার কত বড় কলিজা? তার কলিজা খুলব, আপনার কলিজাও খুলব।
আমি অফিসে এসে আপনাকে অপমান করব। আপনার বিরুদ্ধে মামলা করব। কত বড় সাহস, আপনারে আমি দেখে নেব।’ পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীনের স্থলে গফুর ভূঁইয়াকে সভাপতি করার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া বলেন, ‘বিএনপি ইতিবাচক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে।
বিতর্ক কর্মকাণ্ডে কেউ জড়িত থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে প্রকাশিত খবর আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এতে তাকে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
এ বিষয়ে আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, ‘নোটিশ পেয়েছি, সময়মতো জবাব দেব।’
এমকে/টিকে