জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের পরে যাকে রাষ্ট্র প্রধান বানানো হয়েছে উনি লন্ডনে গিয়ে সিজদা দিয়ে এসেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোনো ঘটনা আছে কি না, অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান একটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসে প্রেস কনফারেন্স করছেন। ওইদিনই তিনি লন্ডনে সরকারকে বেচে দিয়ে এসেছেন। গতকাল শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণপরিষদ নির্বাচন শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
তিনি আরেক প্রসঙ্গে বলেন, ‘একটি সরকার অর্ধেক পরিচালিত হবে পল্টন থেকে, অর্ধেক পরিচালিত হবে এফবিসিসিআই থেকে, অর্ধেক পরিচালিত হবে গণভবন থেকে, একটু পরিচালিত হবে বঙ্গভবন থেকে- এ ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা চাই না। আগের রাষ্ট্রব্যবস্থা কাজ করেনি, যার কারণে ৫ আগস্ট এসেছে। এটা তো সিম্পল হিসাব। আমাদের অবশ্যই একটি নতুন সংবিধান দিতে হবে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যে প্রশাসনের জন্য, যে সেনাবাহিনীর জন্য, যে মিডিয়ার জন্য একটি ফ্যাসিস্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আমরা তাদের কাছেই আবার ৫ আগস্টের পর দায়িত্ব তুলে দিয়েছি একটি গণমুখী রাষ্ট্র গঠনের জন্য। আমরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারিনি, মিডিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারিনি, আমরা মিলিটারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারিনি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন রাজনীতিবিদ বলেছেন, বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে নাকি আমরা (এনসিপি) টাকা নিয়ে আসছি।
আমি চ্যালেঞ্জ দিলাম, বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি যদি গত এক বছরের একটি নথিপত্র বা প্রমাণ দিতে পারে হাসনাত আবদুল্লাহ বা তার সহযোদ্ধারা দুর্নীতি করেছে, আমরা রাজনীতি থেকে ইস্তফা দিয়ে দেব। আপনারা যারা আমাদের শত্রু জ্ঞান করছেন, আমরা আপনাদের শত্রু না। আমরা বাংলাদেশটাকে সুন্দর করতে চেয়েছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বলা হয়, আমরা নির্বাচন পেছাতে চাই। আরে নির্বাচনের টাইমলাইন নিয়ে তো আমাদের সমস্যা নেই।
নির্বাচন নভেম্বরে হোক, ডিসেম্বরে হোক, জানুয়ারিতে হোক- এতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু নির্বাচন হতে হবে ‘রুলস অব গেম চেঞ্জের নির্বাচন’। নির্বাচন যত দ্রুত সম্ভব তত দ্রুত হোক, তাতে কিছু যায় আসে না, কিন্তু অবশ্যই সেটা গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে। আমি আবার পুরনো চুরিতন্ত্রের মধ্যে ঢুকতে চাই না।” হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যারা মনে করছে, গতানুগতিক রাজনৈতিক দলের বাইরে নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থান হতে দেবে না, তাদের বলতে চাই, আসন দিয়ে আপনি আমাদের কিনতে পারবেন না। আমরা বিক্রি হতে আসিনি। সে জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে বলব, আগেই সমঝোতা করে নির্বাচন করলে, সেটার সঙ্গে মধ্যরাতের নির্বাচনের পার্থক্য কী? আমরা তো এই নির্বাচন চাই না।’
কেএস/টিকে