পাবনার আতাইকুলা থানার লক্ষীপুর ইউনিয়নের চতরা বিলে গড়ে উঠেছিল গোপন অস্ত্র তৈরির একটি কারখানা। সোমবার (১৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে আতাইকুলা থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে ওই কারখানার সন্ধান মেলে। অভিযান চালিয়ে পুলিশ একটি রিভলবার, তিন রাউন্ড গুলি এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ দুজনকে আটক করে।
আটকরা হলেন- পাবনা সদর উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের মোস্তফা আলীর ছেলে মনির হোসেন (৪০) এবং একই উপজেলার খোদাইপুর গ্রামের দিরাজ হোসেনের ছেলে রেজাউল করিম (৪২)।
অভিযান প্রসঙ্গে আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম হাবিবুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে চতরা বিল এলাকায় সন্ত্রাসী ময়েজ বাহিনী নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতে অভিযান চালানো হয়। বিলের দুর্গম এলাকার একটি ঘাঁটি থেকে উদ্ধার করা হয় একটি রিভলভার, তিনটি গুলি, ওয়ানশুটারগান তৈরির ব্যাট, ব্যারেল, ছাঁচ, কাটিং মেশিন, ড্রিল মেশিন, ওয়েল্ডিং মেশিন, লোহার পাত, গানপাউডারসহ অস্ত্র তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানিয়েছেন, স্থানীয় ডাকাতি, চাঁদাবাজি এবং বিল দখলের উদ্দেশ্যে এসব অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছিল। এ কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছিল বিল ইজারাদার ফজলু এবং মূলহোতা ময়েজ, যারা মিলে একটি বড় নেটওয়ার্ক তৈরির চেষ্টা করছিল।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, চতরা বিলের দুর্গম চরাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই ময়েজ বাহিনী সক্রিয়। দিনে তেমন দেখা না গেলেও, রাতে তারা অস্ত্র নিয়ে মহড়া চালাতো, যা এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
ওসি হাবিবুল ইসলাম বলেন, ময়েজ বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে চতরা বিলকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। তারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিল। ময়েজের বিরুদ্ধে একাধিক অস্ত্র মামলা রয়েছে।
অস্ত্র তৈরির কারখানাটি ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং অন্যদেরও আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আটক দুইজনকে আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।
এফপি/ টিএ