বৈঠকের পর বিশ্ব রাজনীতিতে আরও শক্ত অবস্থানে রাশিয়া!

ইউক্রেন ইস্যুতে বৈঠকের পর বিশ্ব রাজনীতিতে রাশিয়ার অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ট্রাম্প-জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনে শান্তির জন্য মরিয়া হলেও যুদ্ধ বন্ধে মস্কোর কোনো তাড়া নেই বলে জানান তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের কয়েকদিনের মধ্যেই জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনায় বসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু ইউক্রেন-রাশিয়ার শীর্ষনেতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেননি ট্রাম্প, বরং ইউরোপীয় নেতাদের নিয়ে আসেন হোয়াইট হাউসে। সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বিশ্লেষক স্টিফেন কলিনসন জানান, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ তৎপরতা প্রশংসনীয় হলেও, কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে।

ওই প্রতিবেদনে ‘নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষক। বলেন, ন্যাটোর অনুরূপ প্রতিরক্ষা প্রতিশ্রুতির কথা তুলেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি। কিন্তু রাশিয়া তা মেনে নেবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে। তিনি আরও জানান, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেয়ার স্বপ্ন ভাঙতে যুদ্ধ শুরু করেছেন পুতিন। যদি কোনোদিন মস্কো আবার আক্রমণ করে, তাহলে ইউরোপীয় দেশগুলো সত্যিই সেনা পাঠিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেছে।

আরেকটি বড় বিতর্ক ভূমি বিনিময়। রাশিয়া চাইছে, সামরিকভাবে না জেতা এলাকা আলোচনার মাধ্যমে পেতে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে বাস্তবে ইউক্রেনকে নিজেদের জমি ছেড়ে দিতে হবে রাশিয়াকে, আর নিহত সেনাদের পরিবারের কাছে তার ব্যাখ্যা দেয়া কঠিন হবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের জন্য।

এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্লেষক সের্গেই রাদচেঙ্কোর জানান, ট্রাম্প এখন শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে মরিয়া। আর এ কারণেই জেলেনস্কির সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন আড়াল করে নমনীয় থাকার চেষ্টা করছেন তিনি। কিন্তু একইসঙ্গে ট্রাম্পের হুমকি-ধামকি কার্যকর হচ্ছে না, বরং রাশিয়া বৈঠকের পর আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরেছে।

তিনি বলেন, এটা প্রথমবার নয়, এর আগেও হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার বিরুদ্ধে হুমকি দিয়েছেন, পরে আবার সেই হুমকি থেকে সরে গেছেন। তাই পুরো বৈঠকে ট্রাম্পের দুর্বলতা কিছুটা হলেও প্রকাশ পেয়েছে। তবে যদি শেষ পর্যন্ত তিনি কোনোভাবে একটি শান্তিচুক্তি বা এমন কিছু আনতে সক্ষম হন যা এই যুদ্ধের ইতি টানে, তাহলে আমাদের সবাইকে স্বীকার করতে হবে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার যথাসম্ভব চেষ্টা করেছেন।

রাদচেনঙ্কো মনে করেন, আলাস্কা সম্মেলনে পুতিনের উপস্থিতি ইউরোপীয়দের কাছে শক্ত বার্তা পাঠিয়েছে যে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে দুই পক্ষের সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাতের পর সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে যে, তিনি আসলেই পশ্চিমা নিরাপত্তার পক্ষে নাকি এখনো পুতিনকে প্রশমিত করার কৌশলেই আছেন।

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘অর্ডার ছাড়া বর্ডার ক্রস করো না’: নতুন গানে সতর্কবার্তা, সিনেমাতেও চমক Aug 19, 2025
img
বাংলাদেশ ফুটবল দলের অভুতপূর্ব সাফল্য ও অধিনায়ক আফিদার প্রশংসায় ‘দ্য গার্ডিয়ান’ Aug 19, 2025
দাম্পত্য জীবন সুন্দর করার উপায় Aug 19, 2025
বিপিএল স্পট ফিক্সিং' ত'দ'ন্তে ঢাকার নাম! মুখ খুললো ঢাকা ক্যাপিটালস Aug 19, 2025
পিন্স মামুন নিজেকে খুব ছোট মানুষ বললেও কাজের বেলায় সে বড় : লায়লা Aug 19, 2025
‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ নিয়ে বিস্ফোরক স্মৃতি ভাগ করলেন আমিশা প্যাটেল Aug 19, 2025
প্রিন্স মামুন একটা অন্ধকার জগতের বাসিন্দা! Aug 19, 2025
ক্যানসারের কাছে হেরে যান সঞ্জয় দত্তের প্রথম স্ত্রী Aug 19, 2025
img
ঋতুপর্ণার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতায় মুগ্ধ অভিনেত্রী কাঞ্চনঘরনি Aug 19, 2025
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় ইইউ Aug 19, 2025
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আরও চার কর কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত Aug 19, 2025
img
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জিয়া পরিবারের হাতে নিরাপদ : নিপুণ রায় Aug 19, 2025
শেখ হাসিনার বিদায়েও স্বস্তি ফেরেনি, মুসিবতে মানুষ: দুদু Aug 19, 2025
শান্তি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে রাশিয়ার বিপদ : ম্যাক্রোঁ Aug 19, 2025
২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় চাঞ্চল্যকর তথ্য আইনজীবী শিশির মনিরের Aug 19, 2025
ডাকসু'র ইতিহাসে প্রথম স্বামী-স্ত্রী প্রার্থী,লড়বে একই প্যানেলে! Aug 19, 2025
যেকারনে শিবিরের প্যানেল থেকে নির্বাচন করছে জুলাই যোদ্ধা জসীম Aug 19, 2025
img
দলীয় প্রতীকে হবে না স্থানীয় নির্বাচন, অধ্যাদেশ জারি Aug 19, 2025
img
আল ইত্তিহাদকে হারিয়ে সুপার কাপের ফাইনালে রোনালদোর আল নাসর Aug 19, 2025
img
১৪ দিনের সফরে কানাডা যাচ্ছেন সিইসি Aug 19, 2025