বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজো বিশ্বের দরবারেও সমানভাবে বন্দিত। দিকে দিকে শারদ পার্বণে মেতে ওঠার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিজবাসে বা প্রবাসে থাকা বাঙালিরা। আর পুজো আসা মানেই তা সংস্কৃতিরও এক অঙ্গ। নতুন ছবি, গান বাজনায় ভোরে ওঠে চারিদিক। সেরকমভাবেই পুজো আসার আগে হয়ে গেল এক নতুন পুজো স্পেশাল গানের শুটিং। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের প্রযোজনা সংস্থা ভাবনা আজ ও কাল-র সঙ্গে পুজোর গানের শুটিং সারলেন কাঞ্চনঘরনি শ্রীময়ী চট্টরাজ। তাঁর পোস্ট থেকে আন্দাজ করা যাচ্ছে যে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের প্রযোজনা সংস্থার তরফে সদ্য শুটিং শেষ করা এই পুজোর গান প্রদর্শিত হবে নিউইয়র্ক টাইমস্কোয়ারে। অন্তত শ্রীময়ীর পোস্ট সেরকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
টলিক্যুইন ঋতুপর্ণার সঙ্গে কাজ করতে পেরে যারপরনাই আপ্লুত শ্রীময়ী। সোশাল মিডিয়ায় শুটিংয়ের নানা মুহূর্তের ছবি পোস্ট করে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘নিউইয়র্কে টাইমস্কোয়ারে দুর্গাপূজা।ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর প্রযোজনায়, ফালাক দার পরিচালনায় হই হুল্লোর করে, একটা ফাটাফাটি পূজোর গানে শুটিং করলাম। আমি ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত কে যতই দেখছি ততই অবাক হচ্ছি, এবং অনেক কিছু শিখছি। আমি ভাবি এখন চারপাশে দেখা যায় মানুষ অল্প দিনে কাজ করে, নিজেদেরকে নিয়ে নানানরকম কত বড় বড় কথাবার্তা বলে, ফ্যান্টাসিতে থাকে ,স্টারডাম দেখায়, নিজেদেরকে স্টার ভাবতে শুরু করে, নিজের পিঠ নিজেই চাপড়ায়। নিজেদেরই কত ফ্যান বেস তৈরি করে নিজেদের প্রমোশন করে।আমি ঋতুদির সাথে প্রথম কাজ করছি, অন্য সময় আড্ডা মেরেছি, মনের কথোপকথন শেয়ার করেছি, আমাকে যখন ঋতুদি কাজের অফারটা করে, আমি তখন খুব টেনশনে ছিলাম। আমি ভাবছিলাম ঋতুদি ফ্লোরে কেমন হবে। আর ঋতুদির অভিনয় নিয়ে কথা বলার সাহস আমার নেই,কি ভয়ংকর সাংঘাতিক অভিনেত্রী তার ঋতুদির সিনেমা গুলো কথা বলে।সেই ভয় নিয়েই শুটিং- এ পৌঁছলাম। প্রথম থেকে বলাটাই দরকার, লেখাটা একটু বড় হবে, কোনোটা বাড়িয়ে বলছি না, এটাই ঘটনা। মেকআপ ভ্যানে বসে যখন রেডি হচ্ছি, তখনো আমি একাই রেডি হচ্ছিলাম, কারণ বাকিদের কলটাইম পরের দিকে ছিল, লাঞ্চটাইমে ঋতুদির ছায়াসঙ্গিনী পিয়ালী এল,এবং দেখলাম একটা প্লেটে আমার জন্য ভাত, ইলিশ মাছ, ভেটকি মাছ, আলু ভাজা, আলু সেদ্ধ সুন্দর করে সাজিয়ে বলল ঋতুদি তোমার জন্য পাঠিয়েছে। আমি প্রথমেই অবাক হয়ে গেলাম। ঋতুদির আগের দিন ১০২ জ্বর ছিল, গলা ব্যথা ,গলা দিয়ে আওয়াজ বেরোচ্ছিল না। সেই অসুস্থতা নিয়ে আমাদের কলটাইমের অনেক আগে পৌঁছে সকাল থেকে শুটিং করছে, তার ওপর অতগুলো চেঞ্জ।’
শ্রীময়ী আরও লেখেন, ‘আমি ঋতু দিকে বাড়িতে যা দেখেছি, ফ্লোরেও তাই দেখলাম। ঋতুদির মধ্যে কোন ইনসিকিউরিটি নেই, কোন জটিলতা নেই, মনটা খুব স্বচ্ছ। তাই হয়তো ঋতুদি আজও এত সফল এবং দৃঢ়তার সাথে বাংলা তথা ভারতবর্ষের ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে আছে। উনি এটা বুঝিয়ে দিয়েছেন, স্টার, সুপারস্টার মেগা স্টার ব্লকবাস্টার, সবকিছুর আগে ভালো মনের মানুষ হওয়া জরুরী। ওনার শিক্ষা, সহবত ,পড়াশোনা এটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন, মানুষকে যদি ভালোবেসে আপন করে নেওয়া যায়,তাহলে মানুষের জীবনেও তোমার গ্রহণযোগ্যতা এমনি এমনি আসবে, তার জন্য আলাদা করে এফোর্ট দিতে হয় না।তাই হয়তো ঋতু দি আজও বাংলা সিনেমার ইন্ডাস্ট্রি হয়েও, একজন প্রচার বিমুখ মানুষ। আমার সাথে যদি ঋতুদির আলাপ না হত, আমি হয়তো একটা ভালো মানুষের সান্নিধ্য মিস করতাম। এবং প্রথমবার আমি চৈতি ঘোষাল, চৈতি দির সাথে কাজ করলাম, খুব ভালো একজন অভিনেত্রী। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের প্রোডাকশন ভাবনা আজ ও কালের পুরো টিম অনবদ্য। প্রত্যেকের ব্যবহার অসম্ভব ভালো। খুব মজা করে, হইহুল্লোড়, করে নাচে গানে ,আনন্দে, শুটিং টা যে কখন শেষ হয়ে গেল, সেটা বোঝাই গেল না।’
এফপি/ এস এন