সিলেটের তিন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে আরো প্রায় পৌনে তিন লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ করেছে যৌথবাহিনী। এর মধ্যে শুধু কোম্পানীগঞ্জের উৎমা ছড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয়েছে দুই লাখ ঘনফুট পাথর।
গতকাল সোমবার সকাল থেকে আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায় এসব অভিযান চালানো হয়।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উৎমা ছড়া এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবি।
বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হকের নেতৃত্বে উৎমা বিওপির আদর্শগ্রামে এ অভিযান চালানো হয়। প্রাথমিকভাবে সেখানে পাথর থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট ও সহকারী কমিশনার ইব্রাহিম ইকবাল চৌধুরীর নেতৃত্বে স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী সেখানে ফের অভিযানে গিয়ে দুই লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ করে।
একইদিন জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার জুমপাড়ায় অভিযান চালিয়ে ওই এলাকার একটি পুকুর থেকে দুই হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে জুমপাড়ায় অভিযান চালিয়ে দুই হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে।
এ নিয়ে ওই এলাকা থেকে জব্দ পাথরের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ঘনফুট। এর মধ্যে তিন হাজার ঘনফুট পাথর সাদাপাথরে প্রতিস্থাপন হয়েছে। বাকি পাথর জাফলং জিরো পয়েন্টে নদীতে ফেলা হয়েছে।’
এর আগে গতকাল সোমবার রাতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পাড়য়া এলাকায় পুলিশের অভিযানে ৫০ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়।
ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান। তিনি বলেন, রাতে অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়।
এ ছাড়া জৈন্তাপুর উপজেলায় সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযানে ৯ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করে উপজেলা প্রশাসন।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার লাবনী বলেন, ‘সোমবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তিনটি স্পটে অভিযান চালিয়েছি। বাংলাবাজার স্পটে নিলাম হয়েছে ৩৫ ট্রাক বালু।
বাকি দুই স্পটের ক্রাশার মিল থেকে সাড়ে ৯ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে।’
সিলেটের সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে পাথর লুটকাণ্ডে বিতর্কিত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহারকে বদলি করে করা হয়েছে। তার জায়গায় নিযুক্ত করা হয়েছে ফেঞ্চুগঞ্জের ইউএনও শফিকুল ইসলামকে।
কিন্তু ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে সেই আদেশ পরিবর্তন করা হয়েছে। শফিকুলের পরিবর্তে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার ইউএনও মোহাম্মদ রবিন মিয়াকে কোম্পানীগঞ্জে পদায়ন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা উন নবী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই রদবদল করা হয়। বিভাগীয় কমিশনার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও কারণ সম্পর্কে কিছু বলেননি তিনি।
তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্র বলেছে, ঊর্ধ্বতনদের বদলির নির্দেশনায় বিভাগীয় কমিশনার নতুন ইউএনও নিযুক্ত করেছিলেন। কিন্তু নতুন ইউএনও নিযুক্তির আগে অবহিতকরণ না করায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রদবদল করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাদাপাথর লুটকাণ্ডে গত সোমবার সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মোহাম্মদ মাহবুব মুরাদকে ওএসডি হওয়ার পরই কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহারকে বদলির আদেশ হয়। লুটের ঘটনায় তদন্তকালে তাকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে পরিবেশবাদীদের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে। এমন অবস্থায় নতুন ইউএনও নিযুক্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বদলির নতুন আদেশ হলো।
কেএন/এসএন