ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যানশাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, কর্তৃত্ববাদীদের পতন হলেও কর্তৃত্ববাদী চর্চা এখনও বহাল আছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু, অবৈধ লেনদেন, ঘুষ, গ্রেপ্তার এমনকি জামিন বাণিজ্যও বহাল রয়েছে। এসব দিকে নজর রেখেই গণমাধ্যমকর্মীদের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং দলীয় দৃষ্টিকোনের ঊর্ধ্বে থেকে রিপোর্ট প্রকাশ করা উচিত।
শনিবার (২৩ আগস্ট) সকালে খুলনায় গণমাধ্যমকর্মীদের দিনব্যাপী ‘ডেটা ট্রান্সপারেন্সির মাধ্যমে নির্বাচনী প্রতিবেদন’ শীর্ষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
নগরীর রূপসা স্ট্যান্ড রোডের সিএসএস আভা সেন্টারে এ প্রশিক্ষণে খুলনায় কর্মরত জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক এবং বিভিন্ন টিভি ও অনলাইনের ৩০জন গণমাধ্যমকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ প্রশিক্ষণটি সমন্বয় করেন টিআইবির ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর জাফর সাদিক এবং সহায়তায় ছিলেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কো-অর্ডিনেটর সাইমুম মৌসুমী বৃষ্টি। এছাড়া রিসোর্স পার্সন হিসেবে ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবং নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সদস্য জেসমিন তুলি, টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশনের ডিরেক্টর মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এবং ফ্রিল্যান্স ডাটা জার্নালিস্ট অ্যান্ড অ্যাডুকেটর মুহাম্মদ ইমরান।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণমাধ্যমকর্মীদের বেশ কয়েকটি দিকে নজর রাখা উচিত। এর মধ্যে সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রটি নিশ্চিত হচ্ছে কি না, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর লেভেল প্লেয়িংফিল্ড ঠিক আছে কি না ইত্যাদি পর্যবেক্ষণে রাখা জরুরি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকার আমলের সর্বশেষ তিনটি নির্বাচনের ধারাবাহিকতা এখনও বহাল আছে কি না সেটি মাঠ পর্যায়ের সাংবাদিকদেরই দেখার দায়িত্ব। সে ক্ষেত্রে পেশাদারিত্বের পরিচয়ে রিপোর্টিং করা উচিত, কোন প্রকার দলীয় দৃষ্টিকোন থেকে নয়। এছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের এবং গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকাও নজরে রাখতে হবে পেশাদার সাংবাদিকদের।
অতীতের ন্যায় যাতে দলীয় দৃষ্টিকোন থেকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ না হয় বা সাংবাদিকদের নামে নির্বাচনী কাজে হস্তক্ষেপ কেউ করছে কি না সেটিও পেশাদার সাংবাদিকদের নজরে রাখার আহ্বান জানান টিআইটির নির্বাহী পরিচালক।
ড. ইফতেখার আরো বলেন, সাংবাদিকদের মনে রাখতে হবে আগামী নির্বাচনে কিন্তু ৫ আগস্টে পরাজিত শক্তি বসে থাকবে না। রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত হচ্ছে কি না সেটিও সাংবাদিকদের নজরে রাখতে হবে।
কেএন/টিকে