প্রবীণ সাংবাদিক ও কলাম লেখক বিভুরঞ্জন সরকার আর নেই। ৭০ বছর বয়সী এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। মৃত্যুর আগে একটি খোলা চিঠি লিখে গেছেন তিনি। সেই চিঠিতেই উঠে এসেছে তার ব্যক্তিজীবনের অশান্তি, অর্থকষ্ট, রাজনৈতিক ও পেশাগত জীবনের হতাশা।
এক ভিডিও বার্তায় সেই চিঠি নিয়ে কথা বলেছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ।
সাংবাদিক ফিরোজ বলেন, ‘চিঠির প্রথম লাইনেই বিভুদার আত্মোপলব্ধি- ‘আমার জীবনের কোনো সাফল্যের গল্প নেই। সাংবাদিক হিসেবেও শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারেননি জানিয়ে বলেছেন সংসারের অর্থকষ্টের কথা।’
ফিরোজ বলেন, ‘চিঠিতে সব ছাপিয়ে রাজনৈতিক জীবনের হতাশার কথা তুলে ধরেছেন বিভুদা। তাকে আওয়ামী লীগ ট্যাগ দেয়া হলেও দলটির কাছ থেকে তিনি কোন সুযোগ সুবিধা পাননি। আবার স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে গিয়েও ছিলেন চাপের মধ্যে।’
ফিরোজ আরও বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে অনেকেই নানা সুযোগ-সুবিধা পেলেও বিভুদা পাননি বলে জানিয়েছেন চিঠিতে। এমনকি আগামী প্রকাশনী থেকে তার প্রকাশিত বই থেকে কোনো রয়্যালটিও পাননি।
দু’বার প্লটের জন্য আবেদন করেও হয়েছেন বঞ্চিত। বলার মতো শুধু একবার সিঙ্গাপুরে সফর সঙ্গী হয়েছিলেন শেখ হাসিনার।
বর্তমানে সংবাদকর্মীদের দুর্দশা তুলে ধরে ফিরোজ বলেন, ‘পত্রিকার চাকরি নিয়েও ক্ষোভ ছিল তার। আজকের পত্রিকায় চার বছর ধরে কাজ করলেও পদোন্নতি বা বেতন কোনটাই না বাড়া নিয়ে আক্ষেপ করেন এই প্রবীণ সাংবাদিক।’
ফিরোজ বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিভুরঞ্জন। তার অভিযোগ, সমালোচনার সুযোগ নেই। কোন লেখা প্রকাশ পেলেই চাপ আসে, ফোন আসে।’
১৯৫৪ সালে জন্ম নেওয়া বিভুরঞ্জন সরকার পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা করেছেন। আজাদ, মাতৃভূমি, চলতিপত্র, একতা, মৃদুভাষণ, যায়যায়দিন'সহ নানা পত্রিকায় কাজ করেছেন তিনি।
কেএন/টিকে